দেশজুড়ে

জমি নিয়ে বিরোধ, প্রভাবশালীদের ভয়ে বাড়িছাড়া পরিবার

জমিজমা-সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রভাবশালীদের ভয়ে নিজ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগী এক পরিবার। এই অবস্থায় প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা দাবি করেছেন তারা।

বুধবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে জয়পুরহাট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান তারা। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মোত্তালিব আকন্দ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মোত্তালিবের স্ত্রী মালেকা বেগম, নাবালক ছেলে মাহী, পার্শ্ববর্তী গ্রামের আনোয়ার হোসেনসহ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী।

লিখিত বক্তব্যে মোত্তালিব অভিযোগ করেন, ‘একই গ্রামের (মৌজা) ৫৯ নম্বর খতিয়ানের ১১৯, ১৪৮ ও ৩২৫ নম্বর দাগে পৈত্রিক সূত্রে ও কবলা খরিদ মূলে আমার মালিকানাধীন জমির পরিমাণ ৪২ শতক। সেখানে আমার বসতবাড়িসহ আমবাগান করে পরিবার-পরিজন নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিলাম। এ অবস্থায় আমার ওই সম্পত্তি জবরদখল করতে পরিবার-পরিজনসহ আমাকে উচ্ছেদ করতে প্রভাবশালীরা নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলেন।’

‘এরই ধারাবাহিকতায় গত ২২ নভেম্বর প্রকাশ্য দিবালোকে প্রভাবশালী একই গ্রামের আব্দুল মতিন, মতিনের স্ত্রী তানজিমা খানম (শিমু), ছেলে মেসকাতুর রহমান (সম্পদ), দমদমা গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী শিউলী বেগম, দিবাকরপুর গ্রামের আবুল বাশারের স্ত্রী বিউটি আক্তার ও তাদের দলবল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়ির দিকে এগিয়ে আসলে আমি ও আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা প্রাণভয়ে বাড়ির মূল ফটক বন্ধ করে দিয়ে বাড়ির ভেতরে লুকিয়ে থাকি। অভিযুক্তরা বাড়ির মূল ফটকে ধাক্কা ও লাথি মারার পর আমার বাগানের আমগাছগুলো কেটে ফেলে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান।’

‘পরদিন আবারো প্রকাশ্য দিবালোকে তারা আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমার বাগানের বেড়ায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন। বেশকিছু গাছও উপড়ে ফেলেন। পরে আমাকে মারপিট করাসহ আবারো প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান।’

এ বিষয়ে পাঁচবিবি থানা পুলিশকে অবহিত করে ভুক্তভোগী ওই পরিবার। এছাড়া গত বছর ১৮ জানুয়ারি জয়পুরহাট আমলি আদালত ১৭মে জয়পুরহাট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করা হয়।

মামলা দুটি তুলে নেয়াসহ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য অভিযুক্তরা বারবার বাগান, বাড়িঘর ও পরিবারের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ বিষয়ে বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মোত্তালিব। তিনি বলেন, নিরাপত্তার কারণে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মেয়ে ও নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছেলেকে অন্যত্র সরে রাখতে বাধ্য হয়েছি।

এ পরিস্থিতিতে মোত্তালিব পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান। তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার সম্পত্তি রক্ষাসহ নিরাপত্তা লাভের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চান।

এ ব্যাপারে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্তদের পক্ষে আব্দুল মতিনের স্ত্রী তানজিমা খানম (শিমু) অভিযোগ অস্বীকার করেন।

পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনসুর রহমান বলেন, ‘মোত্তালিবের পরিবারের ওপর হুমকি ও হামলার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

রাশেদুজ্জামান/এসআর/জেআইএম