ফিচার

মানুষ যেসব অধিকার ভোগ করতে পারবে

সাজেদুর আবেদীন শান্ত

মানব পরিবারের সব সদস্যের জন্য সর্বজনীন, সহজাত, অহস্তান্তরযোগ্য এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকারই হলো মানবাধিকার। মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এক ধরনের অধিকার, যা তার জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য। মানুষ এ অধিকার ভোগ করবে এবং চর্চা করবে। তবে এ চর্চা অন্যের ক্ষতিসাধন ও প্রশান্তি বিনষ্টের কারণ হতে পারবে না।

মানবাধিকার সব জায়গায় এবং সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। এ অধিকার একই সাথে সহজাত ও আইনগত অধিকার। স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আইনের অন্যতম দায়িত্ব হলো এসব অধিকার প্রচার ও সুরক্ষিত করা।

চলুন জেনে নেই আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে আমাদের কয়েকটি অধিকার সম্পর্কে-

নাগরিক হিসেবে অধিকার১. সাম্যের অধিকার, জীবন, স্বাধীনতা এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষার অধিকার।২. বৈষম্য, দাসত্ব, নির্যাতন ও অবমাননাকর আচরণ থেকে মুক্তি।৩. আইনের অধীনে একজন ব্যক্তি হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ার অধিকার এবং আইনের আওতায় সমতা।৪. একটি উপযুক্ত ট্রাইব্যুনাল থেকে প্রতিকারের অধিকার এবং একটি সুষ্ঠু জনশ্রুতি।৫. নির্বিচারে গ্রেফতার, নির্বাসন, গোপনীয়তা, পরিবার, বাড়ি এবং চিঠিপত্রের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্তি।৬. অপরাধী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ হিসাবে বিবেচিত হওয়ার অধিকার।৭. নিজের দেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে স্বাধীন চলাচলের অধিকার এবং অন্য দেশে নিপীড়ন থেকে মুক্তির অধিকার।৮. একটি জাতীয়তার অধিকার এবং এটি পরিবর্তন করার স্বাধীনতা।৯. বিবাহ, পরিবারের অধিকার এবং নিজের সম্পত্তির অধিকার।১০. বিশ্বাস ও ধর্মের স্বাধীনতা।

রাজনৈতিক অধিকার১. মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং তথ্যের অধিকার।২. শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও সংগঠনের স্বাধীনতা।৩. সরকারে অংশ নেওয়ার অধিকার। ৪. দেশে সরকারি চাকরিতে সমান প্রবেশাধিকার ৫. অবাধ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকার।

অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার১. সামাজিক সুরক্ষার অধিকার।২. কাঙ্ক্ষিত কাজে অংশ নেওয়ার এবং ট্রেড ইউনিয়নগুলোতে যোগদানের অধিকার।৩. বিশ্রামের অবকাশ, অবসর গ্রহণের অধিকার এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত জীবনমান।৪. শিক্ষার অধিকার, যা উন্নয়নের প্রাথমিক এবং মৌলিক পর্যায়ে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে।

সাংস্কৃতিক অধিকার ১. প্রত্যেক সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক জীবনে অংশ নেওয়ার অধিকার ২. কোনো ব্যক্তির নিজস্ব বৈজ্ঞানিক, সাহিত্যিক বা শৈল্পিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে নৈতিক ও বৈষয়িক আগ্রহের সুরক্ষা।

তাই মানবাধিকার রক্ষা এবং প্রচারের দায়িত্ব আমাদের গ্রহণ করতে হবে। মানবাধিকার সুরক্ষা এবং প্রচার কেবল জাতিসংঘ বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। মানবাধিকার প্রচার ও সম্মানিত এমন পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করার জন্য প্রত্যেকের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে।

লেখক: শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু কলেজ, ঢাকা।

এসইউ/এমকেএইচ