নাটোরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হানকে লাঞ্ছনা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের ভাগনে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নাফিউল ইসলাম অন্তরের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় সোমবার (২৪ মে) রাতে নাফিউলকে আসামি করে সরকারি কাজে বাধা এবং কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে নাটোর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী প্রকৌশলী আবু রায়হান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নাফিউলের বাবা মীর আমিরুল ইসলাম জাহান পাউবোর একজন ঠিকাদার এবং নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। সোমবার বিকেলে ঠিকাদারি কাজের মান নিয়ে মীর আমিরুলের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রকৌশলীর ওপর চড়াও হন তার ছেলে নাফিউল ইসলাম অন্তর।
একপর্যায়ে প্রকৌশলী আবু রায়হানকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন তিনি। এতে প্রকৌশলীর ঠোঁট কেটে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পান। পরে তাকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন পাউবোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ভুক্তভোগী নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভবনের টাইলস লাগানোর কাজ করছেন ঠিকাদার আমিরুল ইসলাম জাহান। সেখানে শিডিউল মোতাবেক ভালো মানের টাইলস লাগাতে বললে ঠিকাদার তাতে অস্বীকৃতি জানান। সোমবার এসব বিষয়ে অফিসে এসে কথা বলতে চান ঠিকাদার। এ সময় অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করেন ঠিকাদার আমিরুল ইসলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘গালিগালাজ না করে ভদ্রভাবে কথা বলতে বললে ঠিকাদারের ছেলে নাফিউল ইসলাম অন্তর উত্তেজিত হয়ে আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এতে আমার ঠোঁট কেটে যায় এবং হাত, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত লাগে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে নাফিউল ইসলাম অন্তরের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
তার বাবা মীর আমিরুল ইসলাম জাহান বলেন, ‘পাউবো কর্তৃপক্ষ টেন্ডার নিয়ে অনেক সমস্যা করত। এর থেকে বাঁচার জন্য তারাই আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায়। সে যাওয়ার পর থেকে আর কোনো সমস্যা হয়নি। আমার ছেলেকে তারা বিভিন্ন সময় কাজ দেয়ার কথা বলেও নির্বাহী প্রকৌশলীর যোগসাজশে অন্যদের কাজ দিয়েছে। গতকালও কাজের কথা নিয়েই এক পর্যায়ে বাগবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলী ও আমার ছেলে দুজনই চেয়ার থেকে পড়ে যায়। সেখানে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি।’
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘কর্তব্যরত অবস্থায় সরকারি কর্মকর্তার ওপর হামলায় কোনো ছাড় দেয়া হবে না। সরকারি কাজে বাধা প্রদান, মারধর ও হত্যার হুমকির কথা উল্লেখ করে প্রকৌশলী আবু রায়হান মামলা করেছেন। আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।’
রেজাউল করিম রেজা/এসজে