দেশজুড়ে

পুলিশকে মরদেহ খুঁজে পেতে সাহায্য করেন খুনিরা

খাগড়াছড়িতে পাওনা টাকা চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে মো. আবুল বাশার (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করেন দুই হত্যাকারী। শুধু তাই নয় হত্যার পর মরদেহ খুঁজে পেতে পুলিশকেও সহায়তা করেন তারা। তারা এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (২ জুন) সকাল ১০টায় খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আবদুল আজিজ।

এর আগে সোমবার (৩১ মে) ভোরে ঘাতক মো. আবদুস সালাম ও তার সহযোগী মো. আনোয়ার হোসেন প্রকাশ সাগরকে মাটিরাঙ্গাধীন বেলছড়ি ইউনিয়নের বাঙলাটিলা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিহত বাশার একই এলাকার বাসিন্দা।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৭ মে) রাতে বাড়ি ফেরার পথে আবুল বাশারকে নিজের মুরগির খামারে ডেকে নেন মো. আবদুস সালাম। এসময় সালামের কাছে পাওনা সাড়ে তিন লাখ টাকা চাইলে আবুল বাশারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে সালাম প্রথমে লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন। পরে গলায় রশি পেঁচিয়ে ধরেন।

এরপর অপর সহযোগী মো. আনোয়ার হোসেন প্রকাশ সাগরের সহায়তায় হাত-পা বেঁধে বাশারকে ঝুলিয়ে ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে নিজ বাড়ির পাশে পাহাড়ের খাদে ফেলে যান। এসময় দায়ের উল্টো দিক দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যান হত্যাকারীরা। ঘটনার পর তারা খামারে ফিরে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত ধ্বংস করেন।

শুধু তাই নয় হত্যাকারীরা নিজে পুলিশের সঙ্গে পাহাড়ের খাদ থেকে মরদেহ উদ্ধার ও জানাজা থেকে দাফন সব কাজেই অংশগ্রহণ করেন। এমনকি নিহতের পরিবারের সদস্যদের বাজারও করে দেন তারা।

সম্মেলনে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আব্দুল আজিজি জানান, গুপ্তচর সহায়তা ও পুলিশের আন্তরিক প্রচেষ্টায় হত্যাকাণ্ডের তিনদিনের মধ্যেই ক্লু লেস এ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১২ ঘন্টারও বেশি সময় নিখোঁজ থাকার পরে শুক্রবার (২৮ মে) সকাল সাড়ে ৮টায় মাটিরাঙ্গার বেলছড়ি ইউনিয়নের বাঙলা টিলা এলাকায় নিজ বাড়ির নিচের খাদ থেকে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মাটিরাঙ্গা সার্কেল) মো. খোরশেদ আলম ও মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্র কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে মো. আবুল বাশারের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই নিহতের ছোট ভাই মো. আবুল কালাম বাদী হয়ে মাটিরাঙ্গা থানায় মামলা করেন।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এসএমএম/এমকেএইচ