পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আবেদন করেছেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার বাসিন্দা হাবিবুল হক। তার অভিযোগ, নরওয়ে থেকে ছুটিতে দেশে আসার পর সাটুরিয়ার কিছু ‘সন্ত্রাসী’ প্রতিনিয়ত তার কাছে চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা না দেয়ায় তার ওপর একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এখন সন্ত্রাসীরা তার পৈতৃক জায়গা-জমি দখল করে নিচ্ছে। এ বিষয়ে সাটুরিয়া থানা পুলিশ তার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ হাবিবুল হকের। যদিও পুলিশ বলছে, এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ দেননি হাবিবুল, তাই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দফতর সূত্র জানায়, গত ১৩ জুন সার্বিক সমস্যার কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের দফতরে আবেদন করেন হাবিবুল হক। তার আবেদনে তিনি নিজেকে নরওয়ের বার্গেন সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত কাউন্সিলর দাবি করেন।
আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, এক বছর আগে তিনি ছুটিতে দেশে আসেন। দেশে আসার পরপরই স্থানীয় সন্ত্রাসীরা তার কাছে নিয়মিত চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় সন্ত্রাসীরা গভীর রাতে বড় বড় পাথর ও ইট দিয়ে তার বাড়িতে ঢিল মারে। সিসি টিভি ক্যামেরা খুলে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ওপর হামলা করে। বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায়। এখন তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই বিষয়ে সাটুরিয়া থানায় গেলেও পুলিশ জিডি নেয়নি। সবশেষ গত ১২ মে সাটুরিয়া থানার পাশে নিজ সম্পত্তি দেখতে গেলে স্থানীয় মতিয়ার রহমান, আতোয়ার রহমান, আব্দুল্লাহ, মো. সজলসহ সাত থেকে আটজন তার ওপর হামলা চালায় এবং হত্যাচেষ্টা করে।
তাই নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ওই আবেদন পাঠিয়েছেন হাবিবুল হক।
এ বিষয়ে হাবিবুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘নিরাপত্তাহীনতায় আমার স্ত্রী-সন্তান দূরে পালিয়ে থাকে। আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করায় তারা আমাকে হত্যার নানা অজুহাত খুঁজতে থাকে। পুরো ঘটনা সাটুরিয়া থানার ওসি বরাবর জানিয়ে গত এক বছর ধরে জিডি গ্রহণের জন্য বারবার আবেদন করে আসছি। কিন্তু তিনি জিডি নেননি। এতে এখন তারা আরও বেপরোয়া হয়ে গেছে। আমিও এক প্রকার গৃহবন্দি অবস্থায় আছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চার ভাই-বোনের সবাই নরওয়ে থাকি। সাটুরিয়ায় বাবার শত বিঘার বেশি জমি রয়েছে। স্থানীয়রা তা দখল করে খাচ্ছে। এখন তারা চায় না আমরা দেশে আসি। তাই সন্ত্রাসী দিয়ে আমার ওপর হামলা করছে তারা। পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে বারবার আবেদন করলেও কারও সহযোগিতা পাচ্ছি না।’
জানতে চাইলে সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘হাবিবুল হকের সঙ্গে তার প্রতিবেশীদের ৫০৬ ধারা তথা হুমকির ঘটনা ঘটছে। কিন্তু তিনি এই ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ দেননি। তাই আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারিনি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।’
ওসি বলেন, ‘একটি বিতর্কিত জমিতে ঘর নির্মাণ নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে হাবিবুল হকের বিরোধ ছিল। এই বিষয়ে তিনি থানায় একটি আবেদন করেছিলেন। তবে জমিজমার বিষয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার আদালতের। আদালত কোনো নির্দেশনা দিলে তা পালন করবে থানা পুলিশ।’
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘হাবিবুল হকের ওপর হামলার বিষয়টি আমি শুনেছি। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের সতর্ক করেছি। তারপরও যদি কেউ তাকে বিরক্ত করে, তাদের নাম-ঠিকানা দিলে ব্যবস্থা নেব।’
এমএমএ/এমআরআর/এইচএ/জিকেএস