সুলতান নামের মধ্যেই আছে রাজকীয় ভাব। তার ওপর ওজন ৪২ মণ। নাম আর ওজনের সমন্বয়ে সুলতান হয়ে উঠেছে শেরপুরবাসীর অন্যতম আকর্ষণ। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পরম যত্নে সুলতানকে বড় করেছেন খামারি রুহুল আমিন। কিছু আয়ের আশায় পরিশ্রম আর যত্নে বড় করেছেন সুলতানকে। তবে প্রিয় ষাঁড়টি নিয়ে দুশ্চিন্তাও আছে রুহুল আমিনের। মহামারির এই দুঃসময়ে কাঙ্ক্ষিত দামে সুলতানকে বিক্রি করতে পারবেন তো?
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রাণিগাঁও এলাকার পল্লী চিকিৎসক রুহুল আমিনের খামারের তিন বছর বয়সী ৪২ মণ (১৬৮০ কেজি) ওজনের এই ষাড়ের চলাফেরা আর খাবারেও রয়েছে রাজকীয় ভাব। এখন পর্যন্ত শেরপুর জেলার সর্বোচ্চ ওজনের ষাঁড় এটি। আসন্ন ঈদুল আজহার হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন রুহুল আমিন।
সুলতানের দৈনিক ১০ কেজি খাবার প্রয়োজন হয়। দিনে দুইবার তাকে গোসল করাতে হয়। চলাফেরা করতে ছয়জনের সহযোগিতা লাগে সুলতানের। তার রাজকীয় ভাব দেখতে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে উৎসুক মানুষের।
শেরপুর শহর থেকে সুলতানকে দেখেতে আসেন মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ মো. শাহেদ রবিন। তিনি বলেন, ‘কয়েকজনের কাছে এই সুলতানের নাম শুনে দেখতে এলাম। এত বড় ষাঁড় দেখে অবাক হয়েছি।’
নূর মোহাম্মদ আকাশ নামের একজন বলেন, ‘আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে সুলতানকে দেখতে এসেছি। এই ষাঁড়কে নিয়ে খামারি বেশ চিন্তায় রয়েছেন। সুলতানকে বিক্রি করতে তাকে সহযোগিতা করার জন্য আমরা স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’
এদিকে করোনার এই সময়ে হাটে সুলতানকে বিক্রি করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন রুহুল আমিন। তিনি বলেন, ‘সুলতানের পেছনে প্রতিদিন অনেক টাকা খরচ হয়। তার নিরাপত্তা দিতেও এখন রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের মতো ছোট খামারির ঘরে এত বড় ষাঁড় রাখাও কঠিন। এই ঈদে সুলতানকে বিক্রি করতে না পারলে খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে হবে আমাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এত বড় ষাঁড় ট্রাক বা কোনো যানবাহনে নেয়াও কঠিন। করোনার কারণে হাটে তোলা না গেলে বেশ বিপদে পড়ে যাবো। তাই স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা যদি অনলাইনে সুলতানকে বিক্রির বিষয়ে সহযোগিতা করতেন, আমি বেশ উপকৃত হতাম।’
এদিকে জেলার খামারীদের জন্য দ্রুত অনলাইনে গরু কেনাবেচার প্ল্যাটফর্ম শুরুর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল হাই। তিনি বলেন, ‘গত বছরের মতো এবারও জেলাভিত্তিক অনলাইন কোরবানির হাট নামের একটি ফেসবুক পেজ আমরা প্রস্তুত করছি। এই পেজের মাধ্যমে খামারিরা তাদের প্রস্তুত করা পশু সহজেই বিক্রি করতে পারবেন।’
ইএ/এমকেএইচ