ওমানে থাকাকালে মানিকের সঙ্গে বাংলাদেশি প্রবাসী এক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয়। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ওমানে তারা কোরআন সাক্ষী রেখে বিয়ে করেন। সেখানে প্রায় দুই বছর স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করেন। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতে দেশে ফিরে আসেন মানিক। সম্প্রতি আরেকটি বিয়ে করেন।
ওমান থেকে দেশে এসে বিষয়টি জানতে পেরে মানিকের বাড়িতে স্ত্রীর দাবিতে অনশন শুরু করেন ওই নারী। মঙ্গলবার (২৯ জুন) দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তিনি লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের কেরোয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কেরোয়া গ্রামে মানিকের বাড়িতে অনশন করেন। পরে রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) শিপন মোল্লা ঘটনার মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত তাকে মানিকের ঘরেই রেখে আসেন।
বুধবার (৩০ জুন) দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই নারী মানিকের বাড়িতেই আছেন বলে তিনি নিজেই জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘মানিক আরেকটি বিয়ে করেছে। তার আরেক বউ আছে, তাতে আমার সমস্যা নেই। আমি মানিকের ঘরেই থাকব। আমার ইজ্জতের মূল্য অনেক বেশি। আমি আমার অধিকার আদায় করে নেব।’
ইউপি সদস্য শিপন মোল্লা বলেন, ‘অনশনকারী নারীকে মানিকের ঘরে তুলে দেয়া হয়েছে। তিনি রাতে ওই ঘরেই অবস্থান করেছেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে।’
এর আগে সোমবার (২৮ জুন) রায়পুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ওই নারী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওমানে যাওয়ার তিন মাস পর মোবাইল ফোনে মানিকের সঙ্গে ওই নারীর কথা হয়। এর এক বছর পর তাদের দেখা হয়। ২০১৯ সালে কোরআন সাক্ষী রেখে তারা বিয়ে করেন। মানিকের বৈধ কোনো কাগজপত্র না থাকায় রেজিস্ট্রি করা সম্ভব হয়নি। পরে মানিক তার কাগজপত্র ঠিক করা এবং ব্যবসার কথা বলে তার কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা নেন। চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি না জানিয়ে মানিক ওমান থেকে দেশে চলে আসেন।
পরে মানিক যোগাযোগ করে সৌদি যাওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে আরও ২ লাখ টাকা দাবি করেন। মানিককে তিনি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দেন। বাকি টাকা ঈদুল আজহার পর দেয়ার কথা বলেন। ওই নারীর বাবাও মানিকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে।
এদিকে সম্প্রতি মানিক নিজ এলাকার এক মেয়েকে বিয়ে করেন। ২৬ জুন দেশে এসে বিষয়টি জানতে পেরে পরদিন মানিকের বাড়িতে ওই নারী স্ত্রীর স্বীকৃতি চাইতে আসেন। এ সময় মানিক তার সব সম্পর্ক অস্বীকার করে তাকে মারধরের চেষ্টা করেন।
এ ঘটনায় কোনো উপায় না পেয়ে বিচারের দাবিতে মানিক ও তার বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে রায়পুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। এরপরই স্ত্রীর স্বীকৃতির জন্য মানিকের বাড়িতে গিয়ে তিনি অনশন করেন।
মানিকের বাবা হাকিম আবদুল মান্নান বলেন, ‘মেয়েটি ও তার অভিভাবকদের নিয়ে বসার প্রস্তুতি চলছে। শিগগিরই বিষয়টি মীমাংসা করা হবে।’
এ ব্যাপারে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জলিল বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে ঘটনাটি মীমাংসা করা হবে বলে শুনেছি। এছাড়া আমাদের পক্ষ থেকে তদন্ত চলছে। ঘটনাটি মীমাংসা না হলে তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কাজল কায়েস/এসজে/জেআইএম