উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে টাঙ্গাইলে যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এতে দুর্ভোগ কমছে না নিম্নাঞ্চলের মানুষের। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকায় পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে। রোববার (২৯ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি আট সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ধলেশ্বরী নদীর পানি পাঁচ সেন্টিমিটার বেড়ে ৪০ সেন্টিমিটার এবং ঝিনাই নদীর পানি সাত সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে লৌহজং ও বংশাই নদীর পানিও।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পানি বাড়ার ফলে অর্ধশতাধিক চরাঞ্চলসহ টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, ভ‚ঞাপুর, মির্জাপুর, বাসাইল ও নাগরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে অব্যাহত আছে নদী ভাঙন। এতে শতাধিক বসতভিটা, মসজিদ, বাঁধসহ নানা স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় ঘরবাড়ি প্লাবিত হওয়ায় অনেকেই গবাদিপশুসহ উঁচু সড়কে আশ্রয় নিয়েছেন। বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটে পড়েছেন দুর্গতরা।
ভ‚ঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ভালকুটিয়া গ্রামের রহম, রফিক, আব্দুলসহ কয়েকজনের অভিযোগ, এলাকার শত শত বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। এলাকার মসজিদটিও নদীতে বিলীন হওয়ার পথে। নিজেরাই বস্তায় মাটি ভরে মসজিদটির ভাঙন ঢেকানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভাঙন রোধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদার বলেন, আলীপুরসহ আশপাশের এলাকার প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি যমুনায় বিলীন হয়েছে। এছাড়াও শত শত ঘরবাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে। ভাঙনও অব্যাহত রয়েছে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, যমুনাসহ জেলার বিভিন্ন নদীর পানি বাড়ায় বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি বাড়তে থাকায় কোনো ব্যবস্থাও নেয়া যাচ্ছে না। পানি কমলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরিফ উর রহমান টগর/এফআরএম/এমএস