দেশজুড়ে

জমি দখল নিতে স্কুল মাঠে লাগানো হলো কলা গাছ

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জমি দখল করতে স্কুলের খেলার মাঠে লাগানো হয়েছে কলা গাছ। সেই গাছ রক্ষায় মাঠের চারপাশ বেড়া দিয়ে ঘিরেও রাখা হয়েছে।

উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘাটনা ঘটে। খেলার মাঠ না থাকায় বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা যেন করতে পারে তা নিশ্চিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।

গোপালপুর পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার বাড়ৈ বলেন, ১৯৫৮ সালে পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়ের মাঠ কেউ নিজের সম্পত্তি বলে দাবি করেনি। কিন্তু ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল খোলার দিন মাঠে বেড়া দিয়ে কলা গাছসহ বিভিন্ন গাছ লাগানো দেখতে পাই। তখন খোঁজ নিয়ে জানতে পারি উপেন্দ্রনাথ টিকাদার নামের জনৈক ব্যক্তি রাতে লোকজন নিয়ে স্কুলমাঠে গাছ লাগিয়েছেন।

স্কুলের বালু ভরাট কমিটিতে তিনি সদস্য থাকা অবস্থায় তিনবার সরকারিভাবে মাঠে বালি ভরাট হলেও তখন উপেন্দ্রনাথ টিকাদার বাধা দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, এটি টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সবচেয়ে বড় খেলার মাঠ। এখানে বিভিন্ন সময়ে ফুটবলসহ গ্রীষ্মকালীন খেলা অনুষ্ঠিত হয়। উপেন্দ্রনাথ মাঠের যে অংশ পৈত্রিক বলে দাবি করছেন সে অংশটি বিদ্যালয়ের নামে রেকর্ড রয়েছে। বিদ্যালয়ে তার ছেলে গণেশ টিকাদারও দপ্তরির চাকরি করেন। এরপরও এমন কাজ তিনি কেন করলেন তা বুঝতে পারছি না। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দেশবন্ধু বিশ্বাস বলেন, এত বছর কেউ মাঠটি পৈতৃক বলে দাবি করেনি। কিন্তু উপেন্দ্রনাথ টিকাদার এখন সম্পত্তি দখলের জন্য রাতে বিভিন্ন গাছ লাগিয়েছেন। এতে শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলাধুলা করতে পারছে না। বিষয়টি দ্রুত সমাধানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী গৌতম মন্ডল, দশম শ্রেণীর অনিমেষ বাইন, নিলরতন বাইন ও সুমন সিকদারসহ আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, দীর্ঘ ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর স্কুল খুলেছে। বন্ধের আগে স্কুলমাঠে সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলা করেছি। কিন্তু স্কুল খোলার পর এসে দেখি মাঠে কে বা কারা কলা গাছ লাগিয়েছে। আমাদের দাবি মাঠটি উন্মুক্ত করে খেলাধুলার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া হোক।

এ বিষয়ে উপেন্দ্রনাথ টিকাদার বলেন, দলিলের বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে অনেকবার কথা বলেছি। বিদ্যালয় মাঠটি আমার পৈত্রিক সম্পত্তি। স্কুলের নামে কীভাবে রেকর্ড হলো তা আমার জানা নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে গাছ লাগানোর বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে জানতে পেরে বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে সহকারী কমিশনার ভূমি ও সার্ভেয়ারকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছিলাম। পরে বিষয়টি নিশ্চিত হই মাঠটি বিদ্যালয়ের নামে রেকর্ডভুক্ত। মৌখিকভাবে তাকে মাঠ থেকে গাছ উঠাতে বলা হয়েছে। এরপরও যদি সে না মানে তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মেহেদী হাসান/এএইচ/এএসএম