জাতীয়

৫ জনকে আসামি করে সেই নরওয়ে প্রবাসীর মামলা

মানিকগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন সেই নরওয়ে প্রবাসী মো. হাবিবুল হক। সোমবার (১ নভেম্বর) বেগম রওশন জাহানের আদালতে বাদী হয়ে তিনি এই সিআর মামলা করেন।

মামলায় মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার আব্দুল মান্নানের ছেলে হামিদুল্লাহ মিয়া, হুমায়ুন কবির ও হাসি উল্লাহ, মৃত সাহা আলীর ছেলে মো. সজীব, মৃত আব্দুল হকের ছেলে মান্নান মিয়াকে আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হামলা, হত্যাচেষ্টা, লুটপাটসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

হাবিবুল হক নরওয়ে প্রবাসী বাংলাদেশি। মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানা সদরের পুরান বাসস্টান্ড সংলগ্ন তার বাসা। তার বাবার নাম আবদুর রহমান (মৃত)।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ৩০ বছর আগে উচ্চশিক্ষা ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য হাবিবুল নরওয়ে যান। পরে তিনি নরওয়ের স্থায়ী নাগরিক ও বার্গেন সিটি করপোরেশনে পরপর দুইবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ২০২০ সালে করোনা মহামারির আগে সপরিবারে দেশে আসেন। নিজ সম্পত্তি দেখভাল ও বাড়ি সংস্কারের কাজ শুরু করেন। তখন তাকে বিতাড়িত করতে কাজে বাধা, নানা রকম হয়রানি শুরু করেন ওই আসামিরা। কারণ তারা দীর্ঘদিন ধরে হাবিবুলের সব সম্পত্তি অবৈধভাবে ভোগ-দখল করে খাচ্ছিলেন।

এর মধ্যে গত বছরের ১৫ জুলাই বাদী হাবিবুল হককে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড, শাবল ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করেন আসামিরা৷ এতে গুরুতর আহত হন তিনি। এলোপাথাড়ি আঘাতে তার বাম হাতের আঙুল ভেঙে যায়। হামলার পর তার বাড়ির গোডাউনে থাকা আড়াই লাখ টাকা মূল্যের এলুমিনিয়াম ও পিতলের মালামাল লুট করে নিয়ে যান আসামিরা। বিষয়টি সাটুরিয়া থানা পুলিশকে জানানো হলেও তারা মামলা নেয়নি। উল্টো আসামিদের সঙ্গে মিমাংসার প্রস্তাব দেয় থানা-পুলিশ।

এমন পরিস্থিতিতে গত ১৩ জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর নিজ পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেন হাবিবুল হক। ১৭ জুন ‘নিরাপত্তা চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন নরওয়ে প্রবাসীর’ শিরোনামে জাগো নিউজে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

হাবিবুল হকের অভিযোগ, জাগো নিউজে এই রিপোর্ট প্রকাশের পর পুলিশ কিছুটা তৎপর হয়েছিল। জেলা পুলিশ সুপার উর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তাকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করান। তদন্তের সময় তাদের সব সাক্ষ্য-প্রমাণ (সিসি টিভি ফিটেজ, হাসপাতালে চিকিৎসার সনদ) দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অজানা কারণে তারা তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। পরে থানায় অভিযোগ দায়েরের জন্য একাধিকবার গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। এখন আসামিরা সাটুরিয়ায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাই নিজ পরিবারের নিরাপত্তা ও হামলার বিচার চেয়ে সোমবার এই মামলা করা হয়েছে।

হাবিবুল হকের আইনজীবী মুহাম্মাদ নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আদালতে অভিযোগের সঙ্গে সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজসহ সব প্রমাণ দেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের ১২ জানুয়ারি পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। আশা করি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বাদী ন্যায়বিচার পাবেন।

এমএমএ/এআরএ