ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় রুহুল আমিন (৩৭) নামে এক ব্যক্তিকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যদের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১ নভেম্বর) সোমবার সকাল ১০টার দিকে রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নে কাঁঠালডাঙ্গীর ৩৭৪/১ এস পিলার এলাকার পাশে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে।
পরে সোমবার রাতে রুহুল আমীনকে ঠাকুরগাঁও শহরের রোদেলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের ভদ্রেশ্বরী ভেলাপুকুর গ্রামের বাসিন্দা।
মঙ্গলবার বিকেলে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, রুহুল আমিনের পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এতে তার শরীরে কালো কালো দাগ হয়ে গেছে এবং তার চিকিৎসা চলছে।
চিকিৎসাধীন রুহুল আমিন বলেন, বাংলাদেশের ২০০ গজ অভ্যন্তরে কুলিক নদীর ধারে দুটি মহিষ দিয়ে আমি আমার জমি চাষ করছিলাম। এ সময় কুলিক নদীতে নেমে সাদা পোশাকধারী দুই ব্যক্তি মাছ ধরা শুরু করেন। পরে তারা আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করেন, কেন আমি জমি চাষ করছি। তাদের প্রশ্নের জবাবে আমি বলি, এই জমিতে আলু ও রসুন রোপণ করবো। তারা আর কথা না বলে আমার গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া সংলগ্ন বটগাছের তলায় নিয়ে যায়। আমার দুটি মহিষও সেখানে নিয়ে যায় তারা। সেখানে এই দুই ব্যক্তির সঙ্গে তিনজন পোশাকধারী বিএসএফ সদস্য আসে। পরে পাঁচজন মিলে আমাকে পেটায়।
রুহুল আমিন আরও বলেন, কেউ বাঁশের লাঠি দিয়ে, কেউ বেতের লাঠি দিয়ে পেটায়। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করে। সীমান্তের কাছে তখন বাংলাদেশিরা ভিড় করছিল। তখন বিএসএফ সদস্যরা আমাকে কাঁটাতারের দরজার কাছে নিয়ে যায়। তারা মহিষের জোঁয়াল খুলতে বলে। খুলতে গিয়ে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। প্রায় দুই মিনিট পর আমার জ্ঞান ফেরে। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা আমাকে বলে, বাংলাদেশে গিয়ে বলবি, ভারতে আর কাউকে আসতে দেবো না। কেউ আসলে গুলি করে মেরে ফেলা হবে। পরে দুপুর দেড়টার দিকে বিএসএফ সদস্যরা আমাকে ছেড়ে দেয়।
রুহুল আমিনের ছোট ভাই রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনছারুল হক বলেন, ভারতের কিশানগঞ্জ ব্যাটালিয়নের মুকেশ ক্যাম্পের সদস্যরা তার ভাইকে নির্যাতন করেন। খবর পেয়ে তারা তাৎক্ষণিক বিজিবির জগদল বিওপির সদস্যদের বিষয়টি জানান।
জানতে চাইলে ৫০ বিজিবির অধিনায়ক এস এম মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
তানভীর হাসান তানু/এমআরআর/জিকেএস