শীত এলেই মৌলভীবাজারের বাইক্কা বিলসহ হাওর-বাওড়, বিল-ঝিলে হাজারো পরিযায়ীদের আগমন ঘটে। একটু উষ্ণতার জন্যই তারা ছুটে আসে হীম প্রবাহের শীত প্রধান দেশ থেকে। বিশেষ করে হিমালয়ের পাদদেশের আশপাশ থেকে আসে হাজারো পরিযায়ী পাখি। শীত দেরিতে নামায় এবার পরিজায়ীদের উপস্থিতি অনেকটা কম।
মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের করতল গ্রামের ঐতিহাসিক শেহের খার দীঘিতে আসতে শুরু করেছে পরিযায়ীরা। শেহের খার দীঘিতে ওরা শীতে আসে, গরমে চলে যায়। তাই এদের আদর করে বলা হয় অতিথি পাখি।
এ দীঘিতে চার বছর ধরে পরিযায়ী পাখি আসে। গ্রামবাসী পাখিগুলোর সঙ্গে আত্মীয়র মতোই আচরণ করেন। তারা কখনো পাখিদের ক্ষতি হয় এমন কাজ করেন না। সব সময় দেখভাল করেন। শিকারীদের হাত থেকে রক্ষার জন্য ভূমিকা রাখেন।
সকাল দুপুর বিকেলে পাখির ওড়াউড়ি আর জলকেলিতে মুগ্ধ হন পথচারীরা। অনেকেই ছবি তোলেন আবার কেউ পাখির ওড়াউড়ির দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে নেন।
পথচারী সীমা আক্তার বলেন, আসা যাওয়ার পথে পাখির দৃশ্য আর কিচিরমিচির শব্দ খুবই ভালো লাগে।
রাজনগর পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী কুতুব উদ্দিন জানান, একটু উষ্ণতার জন্য পরিযায়ীরা সুদুর সাইবেরিয়া ও মধ্য এশিয়া এবং হিমালয়ের পাদদেশ থেকে বাংলাদেশে আসে। এদের মধ্যে রয়েছে বালিহাঁস, কালিম, চখাচখি শামুকখোলসহ আরো নাম না জানা অনেক পাখি। পাখিদের নিরাপত্তা দিলে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ আরো সুন্দর হয়ে উঠবে।
দীঘির পারের করতল গ্রামের রেদওয়ান (২৫) জাগো নিউজকে বলেন, এবার শীত নামতে দেরি হয়েছে, তাই পাখি অনেক কম এসেছে।
পাখিপ্রেমী এলাকার সুলতানা বেগম (৩৫) বলেন, সকালে পাখির কিচিমিচির ডাকে আমরা ঘুম থেকে জাগি। এখানে শীতে পাখিরা আসে, গরম নামলে আবার চলে যায়। কোনো শিকারি পাখি ধরতে এলে এলাকাবাসী প্রতিহত করেন।
এলাকার দুদু মিয়া বলেন, আমরা সব সময় পাখির দিকে নজর রাখি। পাখি খুবই স্পর্শকাতর, তারা বুঝতে পারে কে তাদের ক্ষতি করে। পাখিদের সঙ্গে খারাফ আচরণ করলে নীরবে চলে যায়। বেশি বিরক্ত করলে দূরে চলে যায়। ৪-৫ দিন পর আবার চলে আসে। আবার কখনো আর আসেই না।
বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, শীতের তীব্রতা বাড়লে পাখি আসবে। চলতি মৌসুমে শীতের তীব্রতা অনেকটাই কম তাই পাখি আসতে দেরি করছে। তবে আসবে।
আব্দুল আজিজ/এফএ/এএসএম