ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া নবজাতকের দায়িত্ব নিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিলা কবির ত্রপা। উপজেলা সদর ইউনিয়নে ফাজেলখার ডাঙ্গী গ্রামে পদ্মার পাড়ে অজ্ঞাত পরিচয়হীন মানসিক ভারসাম্যহীন (২৫) এক নারী সন্তান (ছেলে) জন্ম দেন। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) খবর পেয়ে নবজাতকের যাবতীয় দায়িত্ব নেন চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিলা কবির ত্রপা।
সন্তান প্রসবের খবর শুনে দুর্গম পদ্মাপাড়ে ছুটে যান ইউএনও। তিনি নবজাতকসহ প্রসূতিকে স্থানীয় সংরক্ষিত ইউপি সদস্য আছিয়া খাতুন ও ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. বাবুল মোল্যার হেফাজতে রাখেন। একইসঙ্গে তিনি শিশুটিকে শীতবস্ত্র প্রদান, শিশুখাদ্য গুঁড়োদুধের ব্যবস্থা, সুচিকিৎসার জন্য দফায় দফায় স্বাস্থ্য কর্মীদের দিয়ে পরিচর্যার ব্যাবস্থা করে দেন। এছাড়াও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ এবং প্রসূতির সুরক্ষার জন্য ওই গ্রামে শহীদ খানের বাড়িতে দোচালা একটি টিনের ঘর প্রায় ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে মেরামত করে বাসযোগ্য করে দেন।
এ সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জিল্লুর রহমান, চরভদ্রাসন থানার ওসি মো. জিয়ারুল ইসলাম ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজাদ খান উপস্থিত ছিলেন।
ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আছিয়া খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, প্রায় দেড় মাস আগে ওই গ্রামের পদ্মা পাড়ে এলাকাবাসী অজ্ঞাত এক নারীকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পায়। পরে গর্ভবতী অবস্থায় তাকে পার্শ্ববর্তী মৃত মনির উজ্জামান ওরফে মুনা মাস্টারের ছেলে শহীদ খানের বাড়ির একটি পরিত্যাক্ত ঘরে থাকার ব্যবস্থা করেন। শুক্রবার সকালে ওই পাগলি পদ্মাপাড়ে ঘোরাফেরা করছিল। হঠাৎ প্রসব বেদনা উঠলে সে বিবস্ত্র অবস্থায় বসতি এলাকায় ছুটে আসে। এ সময় স্থানীয় নারীরা তার প্রসব করান।
সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজাদ খান জাগো নিউজকে বলেন, খবর শুনে ইউএনও দুর্গম পদ্মাপাড়ে ছুটে গিয়ে প্রসূতি ও নবজাতকের যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করেন। স্থানীয়রা নবজাতকের নাম রেখেছেন আব্দুল্লাহ ইসলাম এবং প্রসূতিকে নীলিমা নামে ডাকছেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিলা কবির ত্রপা জাগো নিউজকে বলেন, নবজাতক শিশুটিকে দত্তক নিয়ে লালন পালন করার জন্য এলাকার বেশ কয়েকজন আবেদন করেছেন। রোববার উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্যদের নিয়ে সভা করে আমরা আবেদনের ভিত্তিতে নবজাতকের অভিভাবক নির্ধারণ করবো।
এন কে বি নয়ন/এফএ/এএসএম