সাব-রেজিস্ট্রি অফিস অন্য জায়গায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্তে উত্তাল হয়ে উঠেছে মৌলভীবাজারের রাজনগর। ১২ দিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন ব্যবসায়ী, দলিল লেখক ও সাধারণ মানুষ।
রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরেও বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা। পরে মৌলভীবাজার-বালাগঞ্জ সড়কের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভের সামনের রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯২ সাল থেকে উপজেলা পরিষদের ভেতর আইন মন্ত্রণালয়ের ভবনের কয়েকটি কক্ষ নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম চলছে। ভবনটি যথেষ্ট মজবুত থাকা স্বত্বেও সংস্কারের উদ্যোগ না নিয়ে অফিস অন্য জায়গায় সরিয়ে নিতে নিবন্ধন অধিদপ্তর থেকে গত ১৯ জানুয়ারি সহকারী মহা-পরিদর্শক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শেখ মো. আনোয়ারুল হক স্বাক্ষরিত পত্রে অনুমতি দেওয়া হয়।
এরই মধ্যে রাজনগর থেকে দূরের কলেজ পয়েন্টে একটি ভবন ভাড়া নেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে বাজার ব্যবসায়ী, দলিল লেখক ও সাধারণ মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে সাব-রেজিস্ট্রারের সঙ্গে আলাপ করে দূরবর্তী স্থানের পরিবর্তে রাজনগর বাজারের আশপাশে একাধিক ভবন দেখা হয়। কিন্তু নানা অজুহাতে এসব ভবনে হবে না বলে কলেজ পয়েন্টে কর্তৃপক্ষ ভাড়ায় অফিস নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে।
এর প্রতিবাদে দলিল লেখকরা ২৭ জানুয়ারি থেকে কলম বিরতি পালন করছেন। ফলে প্রায় অর্ধকোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে এই আন্দোলনের কারণে জমির ক্রেতা-বিক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন। স্থানীয় বাজারের প্রায় চার শতাধিক ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ আন্দোলনে যুক্ত হয়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তীব্র অসন্তোষের ফলে পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে।
রোববার বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রবীণ ব্যবসায়ী আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে অবস্থান ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন- রাজনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান খান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহেদুজ্জামান আনসারী মনাই, পাঁচগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দূর্গা দেব, রাজনগর প্রেস ক্লাবের সভাপতি আউয়াল কালাম বেগ, জেলা দলিল লেখক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মখদ্দুছ মিয়া, ব্যবসায়ী মিনহাজ চৌধুরী, ফুয়াদ হোসেন মুরাদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মিনাজ মিয়া, সাংবাদিক আহমদউর রহমান ইমরান, ছাত্রলীগের সহসভাপতি মিজানুর রহমান রাজু প্রমুখ।
এ বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার এস এম সোহেল রানা মিলন জাগো নিউজকে বলেন, রাজনগরের অফিস ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় ফাইলপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নিকটবর্তী জায়গায় উপযুক্ত কোনো ভবন পাওয়া যায়নি। তাই কলেজ পয়েন্টে ভাড়ায় একটি ভবনে অফিস স্থানান্তরের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টির গুরুত্ব না বুঝে কিছু সংখ্যক মানুষ এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।
সবার সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত পরিস্থিতির সমস্যা সমাধান সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আব্দুল আজিজ/এসজে/জিকেএস