কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন রাজনীতিবিদ ও শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, চার বছর পেরোলেও মামলাগুলোর কোনো তদন্ত হয়নি। এসব মামলায় নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে হয়রানির মধ্যে।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তারা এসব কথা জানান। চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এ সভার আয়োজন করে।
সভায় শিক্ষাবিদ আবুল কাশেম ফজলুল হক এক ভিডিও বার্তায় বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য খারাপ ছিল না, তাদের ভালো উদ্দেশ্য ছিল। শিক্ষার্থীদের যুক্তিসংগত দাবিগুলো সরকার মেনে নিয়েছে। তবে মামলাগুলো এখনও চলছে। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের এসব মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া দরকার।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত রায় চৌধুরী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মামলা চলছে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের নামে করা মামলাও চলছে। বছরের পর বছর পেরুলেও এগুলোর কোনো সুরাহা করা হচ্ছে না। ছাত্ররা আলোর দিশারি। ছাত্ররা সমাজকে পথ দেখায়। অথচ ছাত্রদের হয়রানি করা হচ্ছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ভয় ও আতংকে রাখার জন্য মামলাগুলো ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের নামে মামলাগুলো চার বছর ধরে ঝুঁলে আছে। এসব মামলার মেরিট না থাকার পরও ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে। এর কারণ, এসব মামলা দিয়ে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে।
গণফোরামের এই অংশের আরেক নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক বলেন, ছাত্রদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন হয়েছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনে। সাধারণ শিক্ষার্থীরাই এতে অংশ নেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে কর্তৃত্ববাদী ও পারিবারিক রাজনীতি এ দেশের ওপর চেপে বসে আছে। সে রাজনীতি ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। ছাত্রদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।
সভায় সংগঠনটির সদস্য সচিব ইসমাইল সম্রাট বলেন, প্রতি মাসে মামলার হাজিরা দিতে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হতাশার মধ্যদিয়ে জীবনযাপন করছেন। অপরদিকে এসব মামলাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের বিপদে ফেলা হচ্ছে।
সভায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক দিদারুল আলম ভূঁইয়া, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক এ পি এম সুহেল, জাতীয় জনতার জোটের সমন্বয়ক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এসময় কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী একাধিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি ছিলেন না।
এএএম/ইএ/এএসএম