নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপাতিয়া ইউনিয়নের ইসলাবাড়ী খমার গ্রাম থেকে ৭৬ বছর বয়সে নিখোঁজ হন বৃদ্ধা রাবেয়া। ১০ বছর আগে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ইকড়ি ইউনিয়নের বোথলা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মো. হেদায়েতুল ইসলাম আকনের কুঁড়েঘরে আশ্রয় পান তিনি। তার যত্নে এভাবেই কেটে যায় ১০টি বছর। এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর অবশেষে বৃদ্ধা মায়ের খোঁজ পান তার সন্তানরা। ৯০ বছর বয়সে ফিরে গেলেন নিজ বাড়ি।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে তিন সন্তান আইনুল ইসলাম, বোরহান উদ্দিন, মনোয়ার হোসেন ও নাতি হৃদয় আহমেদ বৃদ্ধা রাবেয়াকে নিতে আসেন। বিদায়কালে তাকে একনজর দেখতে ভিড় করেন কয়েকশ’ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১২ সালে রাবেয়া বেগম উপজেলার ইকড়ি ইউনিয়নের বোথলা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মো. হেদায়েতুল ইসলাম আকনের (হিদু আকন) মায়ের মিলাদ অনুষ্ঠানে এসে উপস্থিত হন। ক্ষুধায় কাহিল দেখে হিদু আকন তাকে খাবার দেন। সেই থেকে রাবেয়া হিদু আকনের কাছে থেকে যান।
হিদু আকন ওই বৃদ্ধাকে নানি বলে ডাকতেন। তার থাকার জন্য বোথলা বাজার সংলগ্ন স্কুল ঘরের সামনে টিনের কুঁড়েঘর তুলে দেন। সেখানে নিয়মিত খাবার দিতেন এবং তাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতেন।
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বৃদ্ধা রাবেয়ার স্বজনদের নজরে আসে। এত বছর মায়ের খোঁজ পেয়ে তার তিন সন্তান মাকে নিতে পিরোজপুরে ছুটে আসেন।
রাবেয়ার বড় ছেলে আইনুল ইসলাম কেঁদে বলেন, ‘২০০৮ সালে মা হঠাৎ হারিয়ে যান। তাকে বহু খোঁজাখুঁজির পরও পাইনি। আমরা বুজেছি এতো বছরে হয়তো মা আর নেই। তাই তার জন্য প্রতি বছর মিলাদ মাহফিলসহ দোয়া করে আসছি। কিন্তু আজ মাকে খুঁজে পেয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে বৃদ্ধার আশ্রয়দাতা মো. হেদায়েতুল ইসলাম আকন জাগো নিউজকে বলেন, ‘বৃদ্ধা নানি রাবেয়া বেগম একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ। ভালোভাবে কিছুই বলতে পারেন না। আজ তাকে বিদায় দিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আবার সন্তানদের হাতে মাকে তুলে দিতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।’
এসজে/জেআইএম