দেশজুড়ে

স্ত্রীসহ ৩ আত্মীয়কে চাকরি দেওয়ার চেষ্টা, সভাপতির অপসারণ দাবি

নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে নড়াইল সদরের সিঙ্গিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দুপুরে এলাকার সচেতন জনগণের ব্যানারে বিদ্যালয় চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন হবখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, হবখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বাদশা মোল্যা, সাবেক ইউপি মেম্বার মিলন মোল্যা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক এম কে সাগর প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, হবখালী ইউনিয়নের সিঙ্গিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম অনিয়ম করে আয়া পদে স্ত্রী নাদিরা সুলতানাকে, পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে বড় ভাইয়ের ছেলে রাসেল মোল্যাকে এবং অফিস সহায়ক পদে বংশের ভাইপো সালমান মোল্যাকে নিয়োগের সব ধরনের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া বিদ্যালয় উন্নয়নের নামেও দুর্নীতি করেছেন। সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে দ্রুত অপসারণ করে বিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বক্তারা।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মাফুজার শেখ বলেন, ‘অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়া পদে নিয়োগের দিন (২০ মার্চ) আমাকে এক ঘণ্টার জন্য নিয়োগ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দেন বিদ্যালয়ের সভাপতি। আমি তেমন পড়ালেখা জানি না। তাই কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিয়োগের কাগজপত্রে সই করিয়ে নেন বিদ্যালয়ের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম। আমার সঙ্গে প্রতারণা করায় সভাপতির অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

এ বিষয়ে সিঙ্গিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাজকুমার দে জানান, তিনটি পদে প্রার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাই করা হয়। পরে নিয়োগ বোর্ডের সদস্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) প্রতিনিধি, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ অন্য সদস্যদের উপস্থিতিতে রোববার (২০ মার্চ) লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ ওঠায় ডিজির প্রতিনিধি এবং সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে নিয়োগের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না পাওয়ায় কাউকেই নিয়োগপত্র দেওয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের দ্রুত অপসারণ দাবিতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পাঁচ সদস্য যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ নড়াইলের জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন করেছেন।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাকে হেয় করার জন্য প্রতিপক্ষের লোকজন মিথ্যা কথা রটাচ্ছেন। বিদ্যালয়ে জনবল কাঠামো নিয়োগের বিধি অনুযায়ী অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়া পদে প্রার্থীদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। কোনো নিয়োগে অনৈতিক হস্তক্ষেপ করা হয়নি।’

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ছায়েদুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফোন করে জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শারীরিক কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। তবে অনিয়মের মাধ্যমে তার তিন আত্মীয়ের চাকরি দেওয়ার প্রচেষ্টার বিষয়টি জানা ছিল না। যদি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হয় তাহলে আর নিয়োগ দিতে পারবেন না।

হাফিজুল নিলু/এসআর/এএসএম