ধর্ম

রমজানে কোরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব

রমজান কোরআন নাজিলের মাস। রমজানের রোজা রেখে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ক্ষমা ও রহমত কামনা করার সুবর্ণ সুযোগ। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোরআন তেলাওয়াত করার সময় আল্লাহর কাছে যেমন রহমত কামনা করতেন আবার তার আজাব থেকে নাজাত চাইতেন।

রমজানে কোরআন তেলাওয়াত করা এবং তা অধ্যয়নের ফজিলত ও উপকারিতা অনেক বেশি। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় বন্ধু নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কোরআন তেলাওয়াতের নির্দেশ দিয়েছেন এভাবে-

 یٰۤاَیُّهَا الۡمُزَّمِّلُ -  قُمِ الَّیۡلَ اِلَّا قَلِیۡلًا -  نِّصۡفَهٗۤ اَوِ انۡقُصۡ مِنۡهُ قَلِیۡلًا -  اَوۡ زِدۡ عَلَیۡهِ وَ رَتِّلِ الۡقُرۡاٰنَ تَرۡتِیۡلًا

‘হে বস্ত্রাবৃত! রাত জাগরণ করুন, কিছু অংশ ছাড়া। অর্ধরাত কিংবা তার চেয়ে অল্প অথবা তার চেয়ে বেশি। আর কোরআন তেলাওয়াত করুন ধীরে ধীরে, সুস্পষ্ট এবং সুন্দরভাবে।’ (সুরা মুজাম্মিল : আয়াত ১-৪)

কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত

কোরআন নাজিলের মাসে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত ও অধ্যয়ন করা অন্য মাসের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি সাওয়াব পাওয়ার উপায়। এটি শুধু পবিত্র রমজান মাসের বিশেষ বরকত। আল্লাহ তাআলা স্বয়ং তাঁর প্রিয় বন্ধু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে কোরআন তেলাওয়াত করার এ নির্দেশনা মুসলিম উম্মাহর জন্যও প্রযোজ্য। আর এতে রয়েছে অনেক কল্যাণ। এ কারণেই হাদিসে পাকে কোরআন তেলাওয়াতকে ‘আফদালুল ইবাদাত বা সর্বোত্তম ইবাদত’ বলা হয়েছে।

রমজানে কোরআন তেলাওয়াত

কোরআনুল কারিম সময়ের ব্যবধানে প্রয়োজনের আলোকে অল্প অল্প করে দীর্ঘ ২৩ বছরে নাজিল হলেও আল্লাহ তাআলা প্রতি রমজানে হজরত জিবরিল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পুরো কোরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন। আবার নবিজীও প্রত্যেক রমজানে জিবরিল আলাইহিস সালামকে কোরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন।

কোরআন তেলাওয়াতের সময় যা করতেন নবিজী

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোরআন তেলাওয়াতের সময় আল্লাহর আদেশ-নিষেধ সম্পর্কিত সব বিষয়ের ওপর আমল করতেন। হাদিসে পাকে সে বর্ণনা ওঠে এসেছে-

হজরত হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘একবার আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে রাতে নামাজ আদায় করছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোরআন তেলাওয়াতের পদ্ধতি ছিল এমন-

১. তিনি খুবই ধীরস্থিরভাবে কোরআন তেলাওয়াত করলেন;

২. তেলাওয়াতে যখন তাসবিহ-এর আয়াত আসতো তখন তিনি তাসবিহ আদায় করতেন।

৩. যখন কোনো নেয়ামতের বর্ণনা আসতো তখন তিনি আল্লাহর কাছে নেয়ামত প্রার্থনা করতেন।

৪. যখন কোনো আজাবের আয়াত আসতো তখন তিনি আল্লাহর আজাব থেকে আশ্রয় চাইতেন।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, কোরআন নাজিলের মাস রমজানে নবিজীর শেখানো পদ্ধতিতে কোরআন তেলাওয়াত করা। কোরআন বুঝে পড়ার চেষ্টা করা। কোরআনে ঘোষিত নেয়ামত পাওয়ার চেষ্টা করা। কোরআনের ঘোষিত আজাব থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা। কোরআনের হুকুম-আহকাম যথাযথভাবে মেনে চলার চেষ্টা করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের হক আদায় করে কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা মোতাবেক ইবাদত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। কোরআনের হেদায়েত দিয়ে নিজেদের আলোকিত করার তাওফিক দান করুন।

এমএমএস/জেআইএম