সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর পানি কমায় হাওরের কৃষকদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাওর এলাকায় নতুন কোনো বাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া যায়নি।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) হাওর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রখর রোদে ধান শুকাচ্ছেন। কেউ বা এখনো ধান কাটছেন আবার কেউ সেই ধান নৌকায় করে গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছেন।
কৃষকরা জানান, গত দুইদিন সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। যদি সপ্তাহখানেক বৃষ্টিপাত না হয় এবং নদীর পানি না বাড়ে তাহলে সোনালী ফসল ঘরে তুলতে পারবেন তারা।
জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার করচার হাওরের কৃষক তাজির মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বাড়াতে আমরা খুব আতংকের মধ্যে ছিলাম। এখন নদীর পানি কমায় সেই আতংক নেই।
একই হাওরের আরেক কৃষক ইয়াসিন মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ধান ঘরে তুলতে পারবো কী না তা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। বাঁধের অবস্থাও ভালো ছিল না। রাতে বাঁধ পাহারা দিয়েছি। তবে এখন নদীর পানি কিছুটা কমায় স্বস্তি মিলেছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরের কৃষক হামিদ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, আবহাওয়া এখন কৃষকদের অনুকূলে। রোদ উঠেছে, বৃষ্টিও নেই, নদীর পানিও কমছে। মোটামুটি এখন আমরা স্বস্তিতে আছি।
জানা যায়, গত ১ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সুনামগঞ্জের ৯ উপজেলায় অন্তত ১৯টি হাওরের বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে গেছে। যদিও প্রশাসনের মতে ৫ থেকে ৬ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে কৃষকদের দাবি, হাওর এলাকার ৯ হাজার হেক্টরেরও বেশি বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জাগো নিউজকে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ হাওর থেকে ধান কেটে আনতে সুনামগঞ্জের বাইরে থেকে শ্রমিক আনা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নির্বিঘ্নে যেন শ্রমিক আসতে পারে সেজন্য পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে সুনামগঞ্জে ১ লাখ ১১ হাজার ৭০০ হেক্টর বোরো ধান কাটা হয়েছে। আশা করি, ৩০ এপ্রিলের মধ্যে কৃষকরা শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবে।
এদিকে, শনিবার সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।
লিপসন আহমেদ/এমআরআর/এমএস