করোনার কারণে গত দুই বছর মার্কেট ও শপিংমলগুলো ঠিকমতো খোলা না থাকায় এবার আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জমে উঠেছে ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমল। প্রিয়জন ও পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করতে ক্রেতারা রাতেও ভীড় করছেন এসব মার্কেট ও শপিংমলে। সম্পূর্ণ ও স্বাভাবিকভাবে এবার মার্কেট খোলা থাকায় ও ক্রেতাদের সমাগমে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন জেলার ব্যবসায়ীরা।
রোববার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উত্তরবঙ্গের বৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী কাপড়ের বাজার জেলার রাণীশংকৈলের নেকমরদ ও রাত সাড়ে ১১টায় ঠাকুরগাঁও শহরের নর্থ সার্কুলার রোডের শপিংমলগুলোতে ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
নেকমরদ বাজারের নবাব ক্লথ স্টোরের কাপড়ের ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, গত বছর করোনার কারণে দোকান ঠিকমতো খুলতেই পারিনি। তাই বেচা-বিক্রয়ও তেমন হয়নি। তবে এবার মার্কেট খোলা থাকায় ক্রেতাদের সমাগম বেড়েছে। অন্যান্য জিনিসের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় এবার কাপড়েরও কিছুটা দাম বেড়েছে। গতবার যে শাড়ি আমরা বিক্রি করেছিলাম সাড়ে ৯শ টাকায় সেই শাড়ি এবার আমাদেরকেই কিনে আনতে হয়েছে সাড়ে ৯শ টাকায়। দাম বৃদ্ধির ফলে ক্রেতাদের বোঝাতে একটু কষ্ট হয়।
ঠাকুরগাঁও শহরের নর্থ সার্কুলার রোডের সততা বস্ত্রালয়ে মাদরাসা ছাত্রদের জন্য কাপড় কিনতে এসেছেন গোয়ালপাড়া দারুস সালাম ক্বাওমী মাদরাসার সাধারণ শিক্ষক মাউলানা মো. ইমদাদুল হক। তিনি বলেন, আগে করোনায় দীর্ঘ সময় মার্কেট খোলা ছিল না। তবে এবার মার্কেট খোলা থাকায় আমরা আমাদের সময় সুযোগ মতো সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে কাপড় কিনতে পারছি। খুব ভালো লাগছে। নতুন পোশাক পেয়ে ছাত্ররাও খুশি হবে।
রাতে পরিবার ও সন্তানের জন্য শপিং করতে এসে সাবিনা আক্তার নামে এক গৃহবধূ জানান, ব্যস্ততার কারণে দিনে মার্কেটে আসার সুযোগ হয়নি। এখন এসে সন্তানের জন্য পোশাক কিনছি। এখনো কেনা শেষ হয়নি, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য কাপড় নেবো তাই মার্কেট ঘুরে দেখছি।
বেবী হাউজের স্বত্তাধিকারী মাহবুব সরকার বলেন, গত দুই বছর করোনার জন্য ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারিনি। এবার কাপড়ের দাম একটু বেশি হলেও মার্কেটে লোকের সমাগম অনেক বেশি। বিক্রিও হচ্ছে ভালো। এখন শারাড়া ও গারাড়া টাইপের পোশাকের চাহিদা বেশি।
এছাড়াও গরমের কারণে সুতি কাপড়ের পোশাকের চাহিদা অনেক বেশি রয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার প্রতি পোশাকে প্রায় ২০০ টাকা মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও ব্যবসায়ীরা জানান, সকাল ১০টা থেকে শুরু করে বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড় থাকে। তারা আশাবাদি ঈদের এ ক’দিন মার্কেটে আরও বেশি মানুষের সমাগম হবে।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ঈদ মার্কেটে সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাদা পোশাকে কাজ করছে। জেলায় ঈদকে সামনে রেখে যেন কোনো বিশৃঙ্খলা না ঘটে সেজন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।
তানভীরর হাসান তানু/এফএ/এমএস