উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুশিয়ারা নদীর তীর উপচে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের ওই গ্রামগুলোর ৬০০ পরিবার। নিচু এলাকার ঘরবাড়ি নিমজ্জিত হওয়ায় ভোগান্তিতে রয়েছেন তিন হাজার মানুষ।
মঙ্গলবার (২৪ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীকূলের কামালপুর, চিক্কা, কেশরপাড়া, সুনামপুর, সুরিখাল ও আমনপুর এ ছয়টি গ্রামের নিচু বাড়িঘর নিমজ্জিত রয়েছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাটসহ শাক-সবজির ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
সুরিখাল গ্রামের মশাহিদ আলী জাগো নিউজকে বলেন, গত তিনদিন ধরে আমরা পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। এতে স্বাভাবিক যোগাযোগ অনেকটা ভেঙে পড়েছে।
একই গ্রামের মুকন্দ বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, আমার বাড়ির চারদিক জলমগ্ন হয়ে আছে। বাড়িটি উঁচু করে তোলায় রেহাই পেয়েছি। বাড়ির পাশে লাগানো ১০ শতকের ঝিঙে, বরবটি ও ঢেঁড়স ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
আমনপুর গ্রামের কুশিয়ারা পারের সুচিত্রা জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ৩/৪ দিন ধরে পানিবন্দি। কেউ আমাদের দেখতে আসেনি।
আমনপুর গ্রামের বৃদ্ধা তছবিরুন বিবি (৬৫) বলেন, চারদিকে পানি আর পানি। তাই এখন আর গ্রামে গ্রামে গিয়ে ভিক্ষা করতে পারি না। হাঁটু সমান পানি ভেঙে অনেক দূর যেতে হয়।
উত্তরভাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিগেন্দ্র সরকার চঞ্চল জাগো নিউজকে বলেন, কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে। আমরা বন্যার কথা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এখনো কোনো ত্রাণ বরাদ্দ হয়নি।
এদিকে, রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বাবলু সুত্রধর জাগো নিউজকে বলেন, আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।
এ নিয়ে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতারুজ্জামানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীকূলের বিষয়টি আমাদের দায়িত্বে পড়ে না। তবে নদীতে পানি বৃদ্ধির প্রভাবে কিছু গ্রাম প্লাবিত হতে পারে।
আব্দুল আজিজ/এমআরআর/এএসএম