দেশজুড়ে

‘বাবা তো আর আমারে মা-মা কইরা ডাকবো না’

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিদগ্ধ মাসুদ রানার (৩৭) মৃত্যুর ঘটনায় জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে চলছে শোকের মাতম।

নিহতের মা জমিলা বেগম বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। কান্না করতে করতে তিনি বলেন, ‘আমার বাবারে কেউ আইনা দেও, আমি দেখমু। বাবা তো আর আমারে মা-মা কইরা ডাকবো না, বাবা তো আর টেহা পাঠাবো না।’

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নের বয়সিং গ্রামের কৃষক দম্পতি খলিলুর রহমান ও জমেলা বেগমের তিন ছেলের মধ্যে সবার বড় মাসুদ রানা। মাধ্যমিকের গণ্ডি না পেড়িয়ে ভাগ্য পরিবর্তনে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। পাঁচ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে আসেন। এরপর ২০১৫ সালে ছুটে যান বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। চাকরি নেন সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোর একটি কোম্পানিতে। সেখানে তিনি এক সপ্তাহ দিনে এবং পরের সপ্তাহ রাতে ডিউটি করতেন।

মাসুদ ১০ বছর আগে বিয়ে করেন। তার দুই বছর বয়সী একটি ছেলে ও সাত বছর বয়সী একটা কন্যাসন্তান রয়েছে। স্ত্রী সুমি আক্তার ও দুই সন্তান নিয়ে তিনি সীতাকুণ্ডে ভাড়াবাসায় থাকতেন।

নিহতের চাচা মোজাম্মেল জানান, ৪ জুন (শনিবার) রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সংঘটিত বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে তিনি গুরুতর দগ্ধ হন। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে মারা যান।

তিনি আরও জানান, মাসুদ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বিস্ফোরণের রাতেই তার সাপ্তাহিক নাইট ডিউটির শেষদিন ছিলো। আর ওই রাতেই এমন দুর্ঘটনা সত্যিই কষ্টদায়ক।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উপমা ফারিসা জাগো নিউজকে বলেন, সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় মাসুদ নামে সরিষাবাড়ীর এক যুবক নিহত হয়েছেন বলে শুনেছি। মরদেহটি এলাকায় আসার পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।

মো. নাসিম উদ্দিন/আরএইচ/জিকেএস