দেশজুড়ে

মাওয়ার আকাশে-বাতাসে ঈদ আমেজ

সব প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ জুন) দুপুর ১২টায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন তিনি।

এদিকে, পদ্মা জয়ের গৌরবগাঁথার দিনে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া পদ্মাপাড়ে যেন চলছে ঈদ উৎসব। দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ পদ্মা সেতুকে কাছ থেকে দেখতে ছুটে আসেন। মানুষের আগমনে পদ্মা সেতুর উত্তর থানা ও মাওয়া চৌরাস্তা এলাকা যেন মিলনমেলায় পরিণত হয়।

মাওয়ার পদ্মাপাড়ে সরেজমিন দেখা যায়, শিশু-বৃদ্ধ থেকে ধরে সব বয়সী হাজারো মানুষের সমাগম হয়েছে সেখানে। জনসমাগমে সামিল হয়েছেন নারীরাও। অনেকেই এসেছেন লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে। তারা জানান পদ্মা সেতু নিয়ে উচ্ছ্বাসের কথা।

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা শরিফউদ্দিন বলেন, এই আনন্দ শুধু দক্ষিণবঙ্গের মানুষের নয়, সারাদেশের। তাই দেখতে ছুটে এলাম।

নরসিংদী থেকে আট বন্ধু ছুটে এসেছেন একই প্রত্যাশায়। তাদের মধ্যে ইমরান নামে একজন বলেন, পদ্মা সেতুকে টিভিতে দেখি। আজকে মাহেন্দ্রক্ষণ, মনটা খুব চাইলো বাস্তবে দেখা জন্য।

তিনি বলেন, রাস্তায় গাড়িতে খুব ঝামেলা হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে কয়েকদফা আটকানো হয়েছে, তবুও এসেছি। যাই হোক, আমরা সেতু দেখবো আর সেতুতে উঠবোই।

এদিকে, বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মুহূর্তকে রঙিন করতে বর্ণিল ও মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট করেছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী । এতে অংশ নেয় ২৮টি বিমান। দুপুর সোয়া ১২টায় বিমানবাহিনীর মহড়া শুরু হয়। ফাইটার বিমান থেকে রঙ ছড়ানো হয় পদ্মার উন্মুক্ত আকাশে। এসময় লাল-সবুজসহ বিভিন্ন রঙে বর্ণিল হয়ে ওঠে পদ্মার আকাশ। মনোজ্ঞ এই ডিসপ্লে উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেইসঙ্গে ব্যতিক্রমী এই দৃশ্য উপভোগ করেন হাজার হাজার জনতা।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, আজকে সর্বত্র আনন্দ। নদী পারাপারে মানুষের যুগযুগ ধরে ভোগান্তির অবসান ঘটছে। বিমান বাহিনীর ডিসপ্লে দেখে মনে হচ্ছে আকাশে-বাতাসেও আনন্দ বইছে।

স্কুলশিক্ষক ইয়ারদৌস আলী বলেন, পাঁচ যুগের বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় অর্জন পদ্মা সেতু। বিশাল অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশ বুঝিয়ে দিয়েছে আমরাও পারি। বলা হয় বাঙালি মাথা নোয়াবার নয়, আসলেই আজ আবার তা প্রমাণ হলো।

স্থানীয় দোকানি আমিনুল ইসলাম বলেন, ব্রিজ কবে চালু হতে তা নিয়ে অনেক বছর অপেক্ষায় ছিলাম। আজকে মনে হচ্ছে যেন ঈদের দিন।

রোববার (২৬ জুন) ভোর ৬টায় যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবেপদ্মা সেতু। এ সেতুর মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে খুব সহজেই দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াত করা যাবে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পদ্মা সেতুতে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে গাড়ি চালানো যাবে না। এ সেতুর ওপর যে কোনো ধরনের যানবাহন দাঁড়ানো ও যানবাহন থেকে নেমে সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে ছবি তোলা বা হাঁটা সম্পূর্ণ নিষেধ।

আরাফাত রায়হান সাকিব/এমআরআর/জিকেএস