ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঝালকাঠির ৪ উপজেলার ২৮টি স্থানে বসেছে স্থায়ী ও অস্থায়ী কোরবানির পশুহাট। স্থানীয় খামারি ও দূর-দূরান্ত থেকে নিয়ে আসা ফড়িয়াদের গরুতে সরগরম হয়ে উঠছে হাটগুলো। কিন্তু ঈদের মাত্র তিনদিন বাকি থাকলেও গরু বিক্রি হচ্ছে কম। ক্রেতা না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় হাট বিক্রেতা ও ইজারাদাররা।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলায় হাট রয়েছে ১৬টি। এছাড়া নতুন করে অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে চারটির। নলছিটি উপজেলায় হাট রয়েছে ১৮টি। এর মধ্যে অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তিনটি। রাজাপুর উপজেলায় হাট রয়েছে ১৬টি। এর মধ্যে অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে পাঁচটি। কাঁঠালিয়া উপজেলায় হাট রয়েছে ১৪টি। এরমধ্যে অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে দুটি।
অপরদিকে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, পশুর স্বাস্থ্যগত বিষয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে প্রতি হাটেই ভ্রাম্যমাণ টিম রয়েছে। এদের মধ্যে সদর উপজেলায় চারটি, নলছিটি উপজেলায় চারটি, রাজাপুর উপজেলায় দুটি ও কাঁঠালিয়া উপজেলায় তিনটি টিম কাজ করছে।
জেলার বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা যায়, প্রচুর পরিমাণ গরু আসছে। তবে ক্রেতার সংখ্যা কম। এছাড়া দরদামে না হওয়ায় গরু দিতে পারছেন না বিক্রেতারা। ঈদ ঘনিয়ে এলেও গরু বিক্রি হচ্ছে কম।
সদর উপজেলার কির্ত্তীপাশা গ্রামের মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, ছয়টি গরু নিয়ে খামার শুরু করেছি। দেশীয় প্রাকৃতিক উপায়ে খাবার দিয়ে গরু বেশ মোটাতাজা করতে পেরেছি। কিন্তু হাট এখনো জমে ওঠেনি। সঠিক দাম না পাওয়ায় একটি গরুও বিক্রি করতে পারিনি।
শহরের ব্যবসায়ী আনিচুর রহমান জানান, দিন দিন মানুষ ব্যবসা কেন্দ্রিক হওয়ায় বাসাবাড়ির সামনের ফাঁকা জায়গা পূরণ করে ফেলে। তাই বাসার সামনে জায়গা না থাকায় বেশিরভাগ মানুষ আগে গরু কিনতে চাইছেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, প্রতিবছর কোরবানির আমেজ বেশ কিছুদিন আগেই শুরু হয়। কিন্তু এ বছর দেশের পরিস্থিতি ভালো না থাকার কারণে মানুষের মধ্যে সেই আমেজ নাই।
রাজাপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী লেববুনিয়া হাটে গরু নিয়ে আসেন তোরাব আলী। তিন কিলোমিটার পথ হেঁটে হাটে এলেও গরুর দাম কম বলায় বিক্রি করতে পারেননি। একই কথা জানালেন সিদ্দিক হোসেন, আবুল মিয়া, আনছার উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন।
লেববুনিয়া হাটের ইজারাদার মো. মহসিন হোসেন জানান, সপ্তাহে মঙ্গল ও শুক্রবারে হাট বসে। মঙ্গলবার হাটে গরু নিয়ে বিক্রির জন্য লোকজন এলেও ক্রেতা ছিল না। চার শতাধিক গরু নিয়ে বিক্রেতারা হাটে এলেও ক্রেতার সংখ্যা ছিল খুবই নগণ্য। বিক্রিও খুবই কম হয়েছে।
আতিকুর রহমান/এসজে/জেআইএম