সাধারণত পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি বনে দেখা মেলে গয়ালের। তবে এবার এই পাহাড়ি গয়াল বা বন গরুর দেখা মিললো মৌলভীবাজারে।
মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বাচ্চু বান্দরবানের গহীন বনাঞ্চল এলাকা থেকে দুটি গয়াল কিনে এনেছেন।
গভীর অরণ্যে বসবাসকারী এই প্রাণী দুটি মৌলভীবাজার জেলায় প্রথমবারের মতো আনা হয়েছে। গয়ালগুলো এক নজর দেখতে উৎসুকরা ভিড় করছেন ওই বাড়িতে।
শনিবার (৯ জুলাই) সকালে মৌলভীবাজার শহরতলীর সোনাপুর এলাকায় দেলোয়ার হোসেন বাচ্চুর বাড়ির আঙিনায় গয়াল দুটি বেঁধে রাখতে দেখা যায়।
জানতে চাইলে ব্যবসায়ী দেলোয়ার জাগো নিউজকে বলেন, আমার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে শখের বশে দুটি গয়াল বান্দরবান থেকে আনা হয়েছে। মৌলভীবাজারে প্রথমবারের মতো এই ধরনের পশু দেখার জন্য উৎসুকরা ভিড় করছেন।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের আলী কদম এলাকা থেকে গয়াল দুটি সাত লাখ টাকায় কেনা হয়েছে। এর একটি কোরবানি দেওয়া হবে। অপর একটি বিক্রি করে দেওয়া হবে। গয়ালের তত্ত্বাবধানের জন্য আলী কদম থেকেই শ্রমিক আনা হয়েছে।
গয়াল দুটির দেখাশোনা করছেন মুজিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বান্দরবান থেকে গয়ালের খাবার আনা হয়েছে। বাঁশের পাতাও খেতে দেওয়া হচ্ছে। লবণ হলো গয়ালের পছন্দের খাবার। একটি গয়ালের ওজন হবে প্রায় ১০ মণ, অপরটির আট মণ। গয়াল দেখতে অনেক কৌতূহলী লোকজন ভিড় করছেন।
গয়াল দেখতে আসা আব্দুল জলিল বলেন, এর আগে বন গরু বা গয়ালের নাম শুনেছি। সরাসরি দেখে খুব ভালো লাগলো।
দিদার আহমেদ নামে আরেকজন বলেন, আমার খুব ভালো লেগেছে যে, আমি গয়াল স্পর্শ করে দেখতে পেরেছি। গভীর বনের পশু কাছে থেকে দেখতে পেয়ে খুবই আনন্দিত।
প্রাণিবিশেষজ্ঞদের মতে, গরু-মহিষের চেয়ে গয়ালের শরীরে হাড়ের পরিমাণ কম তাই মাংস বেশি হয়। চর্বি ও কোলেস্টরেলের পরিমাণও বেশ কম। স্বাদও অনেক বেশি হওয়ায় দিনদিন গয়ালের মাংসের চাহিদা বাড়ছে।
বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলের বাসিন্দারা বহুদিন আগে থেকেই বন থেকে এই গরু ধরে পালনে অভ্যস্ত। দেশের পার্বত্য বনাঞ্চলের গহীন অরণ্যের এই প্রাণিটি এখন সমতলভূমিতেও লালনপালন শুরু হয়েছে। অনেকে বাণিজ্যিকভাবে বা খামারে এক সময়ের বন্য এই প্রাণিটি পালন করতে শুরু করেছেন।
কয়েকবছর ধরে কোরবানির সময় বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও চট্টগ্রামের হাটবাজারে এই প্রাণির দেখা মিলছে।
আব্দুল আজিজ/এমআরআর/জেআইএম