দেশজুড়ে

বই-ইউনিফর্ম ছাড়াই স্কুলে বানভাসি শিশুরা

ভয়াবহ বন্যায় ভেসে গেছে বসত ঘর। সঙ্গে গেছে স্কুলড্রেস, ব্যাগ ও বই-খাতা। তাই ইউনিফর্ম ছাড়াই খালি হাতে বিদ্যালয়ে এসেছে অনেক শিক্ষার্থী। বুধবার (২০ জুলাই) প্রায় একমাস পর স্কুল খোলার পর এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

হাতেগোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী স্কুলে এলেও একমাস আগের চিরচেনা পরিবেশ যেন নেই কোনো প্রতিষ্ঠানেই। এবারের বন্যায় জেলার ২৩১ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩৩টি কলেজ ও ৯২টি মাদরাসার সবকটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি ৫০ হাজার শিক্ষার্থীর বই বানের জলে ভেসে গেছে বলে দাবি করেছেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম।

সুনামগঞ্জ শহরতলির আব্দুল আহাদ সাহিদা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী জামিল হোসেন ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিনহা বেগম। বানের পানিতে বসতঘরের সঙ্গে তাদের বই, খাতা, কলম, স্কুলব্যাগ ভেসে যাওয়ায় বিদ্যালয়ে শূন্য হাতেই এসেছে তারা।

বুধবার (২০ জুলাই) স্কুলে প্রবেশের সময় দুজনেই চিন্তিত ছিল শিক্ষকরা কী বলবেন সেই ভাবনায়। বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে দেখলো কেবল তারা নয়, অনেকেরই এমন করুণ অবস্থা। পুরো জেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদরাসায় একই চিত্র।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, বন্যায় তাদের ইউনিফর্ম ড্রেস, স্কুলব্যাগ, বই ও খাতা-কলম ভেসে গেছে। আজকে শুধু একটা খাতা আর কলম নিয়ে স্কুলে এসেছে। সামনে এসএসসি পরীক্ষা কিন্তু অনেকের বই নেই। এখন কিভাবে বই ছাড়া পরীক্ষা দেবে সেই দুশ্চিন্তায় আছে। দ্রুত বই দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানায় তারা।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জামিল হোসেন জাগো নিউজকে জানায়, অনেক চেষ্টা করেছি বই ও স্কুলড্রেস বাঁচাতে কিন্তু পারিনি। বন্যা সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, শিক্ষার্থী-শিক্ষক উপস্থিতির খাতা এমনকি স্কুল লাইব্রেরির বইও পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। বিদ্যালয়গুলোরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের বই দ্রুতই পৌঁছে দেওয়া হবে। এরই মধ্যে সুনামগঞ্জের ৫০ হাজার শিক্ষার্থীর বই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

এফএ/এএসএম