বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব করেছেন ৯ ইউপি সদস্য। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে তাদের সই করা অনাস্থা প্রস্তাব শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
অনাস্থা প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদের আট মাস মেয়াদকালে ইউপি সদস্যদের নিয়ে একটিও মিটিং করেননি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই। কোনো আলোচনা ও পরামর্শ না করে সব কাজ একাই মনগড়াভাবে করে চলেছেন তিনি। ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্স বাবদ সাত লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন চেয়ারম্যান। ইউপি সদস্যদের বেতন-ভাতা না দেওয়ারও অভিযোগ করা হয়েছে অনাস্থা প্রস্তাবে।
এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের নামে বিভিন্ন ইউপি সদস্যদের কাছ থেকে ব্ল্যাঙ্ক চেক নিয়ে পরবর্তীকালে গোপনে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ এবং গত আট মাস ধরে ধারাবাহিক বিভিন্ন দুর্নীতি অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ আনা হয়েছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে সরকারি অনুমতি ছাড়া রাস্তার পাশের গাছ কাটার অভিযোগও করা হয়েছে অনাস্থা প্রস্তাবে।
অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে লছমনপুর ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্বাস আলী বলেন, এই চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদে ইচ্ছা তাই করেন। আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা বা পরামর্শ করেন না। টাকা-পয়সার হিসাব না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করেন। তিনি মহিলা ইউপি সদস্যদের নানা ভয়ভীতি দেখান। তাই আমরা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছি।
লছমনপুর ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম বলেন, চেয়ারম্যান তার মন মর্জি মতো কাজ করেন। এলাকার মানুষের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই। অনিয়ম আর দুর্নীতি করে চলেন তিনি। তাই আমরা তার বিরুদ্ধে ইউএনও ও ডিসির কাছে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছি।
অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে লছমনপুর প্যানেল চেয়ারম্যান ও ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল হাশেম বলেন, আমরা অনাস্থা প্রস্তাবে সব অভিযোগ উল্লেখ করেছি। আশা করি, সঠিক তদন্তের পর দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে এসব ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, আমি এখনো কাগজ হাতে পাইনি। তবে যা শুনলাম, তাদের উল্লেখ করা মন্তব্যগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কাগজ হাতে পেলে বিস্তারিত বলতে পারবো।
শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহনাজ ফেরদৌস বলেন, আমি অনাস্থা প্রস্তাবটি হাতে পেয়েছি। এটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানোর পর তদন্ত শুরু হবে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে পরবর্তীকালে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইমরান হাসান রাব্বী/এমআরআর/এএসএম