কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিনে একটি কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ের আধাঘণ্টা আগেই উত্তরপত্র নিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। পরে পরীক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে প্রায় ২০ মিনিট পর আবারও বাকি সময়ের পরীক্ষা নেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) উপজেলা সদরের হোসেনপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিনজন হল সুপারকে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হোসেনপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে এসএসসি ভোকেশনালের ১৭৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। বেলা ১১টায় পরীক্ষা শুরু হয়। দুই ঘণ্টা পর দুপুর ১টায় পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিট আগে সাড়ে ১২টায় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে উত্তরপত্র নিয়ে যান।
এতে ওই কেন্দ্রে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। পরীক্ষার্থীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করে। পাশাপাশি তারা বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানায়।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই কেন্দ্রে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন পরীক্ষার সময় দুই ঘণ্টা। কিন্তু কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ভুল করে দেড় ঘণ্টা পর উত্তরপত্র নিয়ে যায়। পরে বিদ্যালয় মাঠে ও আশপাশে থাকা সব পরীক্ষার্থীদের জড়ো করে প্রায় এক ঘণ্টা পর আবারও প্রশ্ন ও উত্তরপত্র দিয়ে অবশিষ্ট ৩০ মিনিটের পরীক্ষা নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব ও হোসেনপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী আসমা বেগম বলেন, ‘ভুল করে আধাঘণ্টা আগে ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীদের খাতা নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে বুঝতে পেরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আবারও তাদের বাকি সময় উত্তরপত্রে লেখার সুযোগ দেওয়া হয়।’
পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাবেয়া পারভিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ভুলের কারণে এমনটি হয়েছে। পরীক্ষার সময়ের বিষয়ে বোর্ডের বিশেষ নির্দেশাবলীর প্রথমেই উল্লেখ ছিল দুই ঘণ্টার পরীক্ষা দেড় ঘণ্টা এবং তিন ঘণ্টার পরীক্ষা দুই ঘণ্টা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এমন নির্দেশনায় বিভ্রান্ত হয়ে প্রশ্নপত্রে দুই ঘণ্টা সময় উল্লেখ থাকলেও দেড় ঘণ্টায় পরীক্ষা শেষ করে দেওয়া হয়। পরে আমার উপস্থিতিতে ১৭৫ জন পরীক্ষার্থীর সবাইকে বাকি ৩০ মিনিট পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কেন্দ্রের তিনজন হল সুপারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলেন জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ ঘটনায় কেন্দ্র সচিবের কোনো গাফিলতি থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নূর মোহাম্মদ/এসআর/জেআইএম