দেশজুড়ে

ইছামতিতে হেলে পড়লো ব্রিজ, অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষের ভোগান্তি

অসুস্থ এক আত্মীয়কে দেখতে দৌলতপুর উপজেলার জিয়নপুর যাচ্ছিলেন নির্মাণশ্রমিক আব্দুর রহিম। এজন্য সকালে সাভারের বাসা থেকে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে রওনা হন তিনি। কিন্তু ঘিওরের কুস্তা এলাকায় গিয়ে দেখেন ব্রিজ ভাঙ্গা। খুবই বিপাকে পড়ে যান তিনি। গন্তব্যে পৌঁছতে গেলে তাকে ১৫ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হবে।

মানিকগঞ্জের ঘিওর-জিয়নপুর সড়কের কুস্তা বেইলি ব্রিজের দুই পাশের অংশ হেলে পড়ে বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে। এরপর থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে এ পথের সড়ক যোগাযোগ। এর ফলে চরম দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়েছেন অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, ঘিওরহাট সংলগ্ন এলাকায় ইছামতি নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে। এরমধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে হাটের বেশ কিছু অংশ। নদীতে গেছে অন্তত ১৫টি বসতভিটা। বৃহস্পতিবার থেকে ব্রিজের দুই পাশের মাটি ধ্বসে যেতে থাকে। একটু একটু করে হেলে পড়ে সেতু। এক পর্যায়ে সড়ক থেকে ব্রিজটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে যান চলাচলসহ মানুষের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান লাভলু দর্জি জানান, ব্রিজের এক পাশে রয়েছে সরকারি খাদ্য গুদাম। সেখানে মালামালসহ ২-৩টি ট্রাক আটকা পড়েছে। ব্রিজ ধ্বসে যাওয়ায় খাদ্যগুদাম থেকে বিভিন্ন ইউনিয়নের ওএমএসের চালও নিতে পারছেন না ডিলাররা।

দুই পাড়ের রিকশা, ভ্যান ও মোটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহনের মালিকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। অনেকের রুটি রুজি বন্ধ হয়ে গেছে।

রফিকুল ইসলাম নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, হঠাৎ করে ইছামতির এমন ভাঙনে স্থানীয়রা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড আগে থেকে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিলে এতে ক্ষয়ক্ষতি হতো না। ভয়াবহ রূপ নেওয়ার পরই তারা বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি জানান, এখনও হুমকির মুখে রয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকার কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কবরস্থান, শশ্মান ঘাট, মন্দির, মসজিদ, বসতবাড়ীসহ ফসলি জমি।

এদিকে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে হেলে পড়া বেইলি ব্রিজটি টেনে তোলার কাজ শুরু করেছে স্থানীয় এলজিইডি বিভাগ। তারা বিশেষ কায়দায় ব্রিজটি টেনে তোলার চেষ্টা করছে।

ঘিওর উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা প্রকৌশলী সাজ্জাকুর রহমান জানান, ব্রিজটি মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। আশা কারি দুই-তিন দিনের মধ্যে এ সড়কে পুনরায় যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

বি.এম খোরশেদ/আরএইচ/এমএস