দেশজুড়ে

হাসপাতালে মায়ের মরদেহ রেখে পরীক্ষা দিলো সুমাইয়া

হাসপাতালে মায়ের মরদেহ রেখে বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা দিয়েছে সুমাইয়া আক্তার নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী।

শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে তাকে পানছড়ি মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পৌঁছে দেয় পুলিশ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুমাইয়া পানছড়ি উপজেলা সদরের সাঁওতাল পাড়ার বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলামের মেয়ে। সে পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

আজ তার বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা ছিল। সকালে কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল সুমাইয়া। কিন্তু সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ খবর আসে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা আর বেঁচে নেই। সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে যায় সুমাইয়া। তখন দ্রুত তাকে পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। তার মায়ের মৃত্যুর খবরে স্বজন-প্রতিবেশীসহ সবাই শোকে কাতর।

এদিকে খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে আসেন পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনচারুল করিম। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় সুমাইয়াকে মানসিক সাপোর্ট দিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে যান তিনি। চমেক হাসপাতালে মায়ের মরদেহ রেখে এসএসসি পরীক্ষায় বসে সুমাইয়া।

পানছড়ি মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলি চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, সার্বক্ষণিক তার খেয়াল রেখেছি। তবে পরীক্ষা দিতে এসে তার কোনো অসুবিধা চোখে পড়েনি। মাতৃস্নেহে তার মাথায় হাত বুলিয়ে শান্ত হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য উৎসাহ দিয়েছি।

পানছড়ি থানার ওসি আনচারুল করিম জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। মায়ের মৃত্যুতে জ্ঞান হারানো মেয়েটিকে হাতে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় আমি নিজেই পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছি। এটা দায়িত্ব মনে করেই করেছি। তাকে সাহস যুগিয়েছি এবং দুজন পুলিশ সদস্যকে সার্বক্ষণিক তার পাশে থাকার ব্যবস্থা করেছি।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এসজে/এএসএম