মানিকগঞ্জে ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট করতে এসে ধরা পড়েছেন দুই রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ। রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে তাদের আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়।
আটকরা হলেন, কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হুমাইরা বেগম ও আবু তাহের।
মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক নাহিদ নেওয়াজ বলেন, মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চান্দহুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চর চান্দহুর গ্রামের খলিলুর রহমানের মেয়ে তাসনিমা বেগম পরিচয়ে ওই নারী পাসপোর্ট করতে আসেন। জন্মসনদসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদলের সই করা পরিচয়পত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেন। এরপর ওই নারী ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে গেলে রোহিঙ্গা হওয়ার বিষয়টি শনাক্ত হয়। তার প্রকৃত নাম হুমাইরা। তিনি উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, পাসপোর্ট করতে আসা ওই নারীর সঙ্গে আবু তাহের নামে এক রোহিঙ্গা যুবকও ছিলেন। পরে তাদের দুজনকে পুলিশে দেওয়া হয়।
সিংগাইরের চান্দহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন বাদলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। পরিচয়পত্রে দেওয়া স্বাক্ষরটি আমার নয়। সই জাল করেই হয়তো চক্রটি এই অপকর্ম করেছে। তিনি এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করবেন বলেও জানান।
আটকরা জানান, তারা দালালের মাধ্যমে এক লাখ টাকা চুক্তিতে পাসপোর্ট করতে আসেন। এরই মধ্যে ৬০ হাজার টাকা পরিশোধও করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে দালাল চক্রকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
রোহিঙ্গা যুবক আবু তাহের জানান, ২০০৮ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গা হিসেবে স্থায়ীভাবে তিনি চকরিয়ায় থাকেন। তিনি স্থানীয় একটি হোটেলের কর্মচারী। ওই নারী তার সম্পর্কে চাচি। চাচা সৌদি আরব থাকেন। শাদ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোনে পাসপোর্ট করার জন্য এক লাখ টাকা চুক্তি হয়। ওই ব্যক্তিই সব কাগজপত্র তৈরি করে দেন। তারা রোববার কক্সবাজার থেকে মানিকগঞ্জে আসেন। এর পর দালাল শাদের সঙ্গে তারা পাসপোর্টের যাবতীয় কাগজপত্র জমা দেন। পাসপোর্ট কর্মকর্তা কাগজপত্র দেখে সন্দেহ হওয়ায় তার কাছে সত্য ঘটনা প্রকাশ করেন।
রোহিঙ্গা নারী হুমাইরা জানান, তার বাবা হামিদুল্লাহ মারা যাওয়ার পর ২০১৭ সালে তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশে আসেন। ২০২০ সালে মোবাইল ফোনে তোফায়েল হোসেন নামে এক সৌদি প্রবাসীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সৌদিতে স্বামীর কাছে যাওয়ার জন্যই তিনি পাসপোর্ট করতে আসেন।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার বলেন, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে এক রোহিঙ্গা নারী ও যুবককে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ঘটনা তদন্ত করে দালাল চক্রসহ যদি আরও কেউ এতে জড়িত থাকে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
বি এম খোরশেদ/এমআরআর/জেআইএম