দেশজুড়ে

অজ্ঞাত চর্মরোগে আক্রান্ত একই গ্রামের ৬০ জন, মিলছে না প্রতিকার

নাটোরের গুরুদাসপুরে একধরনের চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছেন একই মহল্লার প্রায় ৬০ জন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়েও এ রোগের কোনো প্রতিকার মিলছে না বলে জানিয়েছেন রোগীরা।

বুধবার (৫ অক্টোবর) সকালে উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের পাবনা পাড়া মহল্লায় গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।

প্রায় দেড়বছর আগে পাবনা পাড়া মহল্লার সুলতানের স্ত্রী লিমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘামাচির মতো বের হয়। পরে ব্যাপক চুলকানোর কারণে জায়গাগুলো লাল হয়ে যায়। তার তিনদিন পর তার মেয়ের শরীরেও একই লক্ষণ দেখা দেয়। প্রথমে স্থানীয় পল্লিচিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেন। কিন্তু চুলকানি আরও বেশি হতে থাকে। একপর্যায়ে নাটোর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ একজন চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করেন। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি।

লিমার প্রতিবেশীদের শরীরেও একই রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। ধীরে ধীরে রোগটি মহল্লায় ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে ওই মহল্লায় নারী, পুরুষ ও শিশুসহ প্রায় ৬০ জন আক্রান্ত বলে জানা গেছে। তবে তারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন। এমনকী রোগের সঠিক নির্ণয়ও করতে সক্ষম হননি কেউ।

লিমা বলেন, ‘দেড় বছর আগে হঠাৎ করেই আমার শরীরে ঘামাচির মতো বের হয়ে চুলকানো শুরু হয়। ব্যাপক যন্ত্রণায় না থাকতে পেরে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করি। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। এরপরও যখন শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকানি বেশি হতে লাগলো তখন নাটোর শহরের একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ সেবন করি।’

‘তিনিও বলেন এটি চর্মরোগ। কিন্তু ওষুধ সেবনের পরও কোনো কাজ হয় না। পরবর্তী সময়ে চর্ম ও মেডিসিন রোগ বিশেষজ্ঞ প্রায় সাতজন ডাক্তার দেখিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার পাইনি। এমনকী এই রোগের নাম কী তাও কেউ সঠিকভাবে বলতে পারেনি।’

আক্রান্ত হাজেরা, রিমা, সুলতান, মেহেদিসহ প্রায় ১৫ জন রোগী জানান, দিনরাত ২৪ ঘণ্টা শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকায়। এমনকী অনেক সময় আক্রান্ত স্থানে চুলকানোর কারণে রক্ত বের হয়। ফুলে লাল হয়ে যায়। কিন্তু ওষুধ খেয়েও কোনো প্রতিকার পান না।

সুয়াইবা নামের আক্রান্ত এক শিশুর মা বলেন, ‘আমার ছোট্ট শিশু চুলকাতে না পেরে চিৎকার করে। শিশু বিশেষজ্ঞ, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। এখনো রোগ থেকে মুক্তি পাইনি। সন্তানকে নিয়ে অনেক সমস্যায় আছি।’ এ বিষয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আক্রান্ত রোগীরা কখনো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেননি। তাদের হাসপাতালে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আক্রান্ত রোগী ও আক্রান্তের স্থান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

রেজাউল করিম রেজা/এসআর/জিকেএস