আইন-আদালত

আইনজীবী মাহাবুবুলকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে স্থগিত

মানিকগঞ্জে ঘুস-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সহযোগীদের নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করায় আইনজীবী মাহাবুবুল ইসলামকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আইনজীবীর বিষয়ে নালিশ করে বার সমিতিকে মানিকগঞ্জের জেলা জজের পাঠানো চিঠি কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আইন সচিব, দুদকের চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সচিব, মানিকগঞ্জ জেলা জজ, দুদকের মানিকগঞ্জ অফিসের উপপরিচালক, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

পাশাপাশি রিটে মানিকগঞ্জের আদালতে ঘুস-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আরও পড়ুন: ‘ঘুসের চেয়ে ভিক্ষা উত্তম, আমাকে ভিক্ষা দিন’

আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

আদেশের বিষয়ে সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, এই আদেশের ফলে আইনজীবী তার পেশায় ফিরে যেতে পারবেন। এছাড়া মানিকগঞ্জে ঘুস-দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজকোর্টের পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বলা হয়েছে। এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মাইলফলক আদেশ।

গত ১০ অক্টোবর অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন আইনজীবী বিচার বিভাগের বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেন। সেখানে তারা দাবি করেন, এফিডেভিট করতে নির্দিষ্ট ফির অতিরিক্ত ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এক হাজার টাকার কমে কোনো নকল সরবরাহ করা হচ্ছে না। রেকর্ড রুম থেকে নথি পেতে হলে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। আদালতের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিচারপ্রার্থীদের মামলার খরচ অনেক বেড়ে যায়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জামিলুর রশিদ খান ও সাধারণ সম্পাদক এ এফ এম নূরতাজ আলম বাহারের স্বাক্ষরে মাহাবুবুল ইসলামকে ১৫ কার্যদিবসের জন্য আইনপেশা থেকে বিরত থাতকে এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

মাহাবুবুল ইসলাম ও তার সঙ্গীদের এমন কর্মকাণ্ডে বার ও বেঞ্চের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা জেলা আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করেছেন বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় সোমবার (২৪ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল ইসলাম আশরাফ হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।

এফএইচ/ইএ/জেআইএম