চাকরি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা চেয়ে ভারতের হরিয়ানায় জাঠদের চলমান আন্দোলনের ফলে তীব্র পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে রাজধানী দিল্লিতে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল রোববার ঘোষণা দিয়েছেন, দিল্লিতে ব্যবহারের জন্য আর পানি অবশিষ্ট নেই এবং এ সঙ্কট অন্তত আরো দুই দিন চলবে। নিজের বাসভবনে রোববার জরুরি এক বৈঠক শেষে কেজরিওয়াল সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘হরিয়ানায় আন্দোলনের ফলে মুনাক খাল থেকে দিল্লিতে গত দুই দিন পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আর এর ফলে তীব্র পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং ও হরিয়ানার মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছি।’ পানি সরবারহ স্বাভাবিক করতে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে গতকাল রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান কেজরিওয়াল। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে এসব বলা হয়েছে। পানি সঙ্কট মোকাবিলায় সবাইকে যথাসম্ভব কম পানি খরচেরও আহ্বান জানানো হয়েছে। মুনাক খাল থেকে পানি সরবরাহ শুরু হওয়ার পর পানি শোধনাগারগুলো পুরোপুরি সক্রিয় হতে অন্ততপক্ষে ২৪ ঘণ্টা সময় লেগে যাবে বলেও সাবধান করে দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, পানি সঙ্কটের কারণে সোমবার দিল্লিতে সব স্কুল বন্ধ থাকবে এবং ওইদিন যে পরীক্ষাগুলো হওয়ার কথা ছিল সেগুলো পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। বিভিন্নভাবে সামান্য যে পানি এখনো সংরক্ষিত আছে তা ট্যাঙ্কারের সাহায্যে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হবে। কেজরিওয়াল এরআগে সাধারণ মানুষ ও গুরুত্বপূর্ণদের সমভাবে পানি বণ্টনের কথা বলেছিলেন। পানির অভাবে শোধনাগারগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যেসব এলাকায় তীব্র পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- পশ্চিম দিল্লি, উত্তর-পশ্চিম, মধ্য, দক্ষিণ এবং উত্তর দিল্লির কিছু অংশ। এদিকে আনন্দবাজার জানিয়েছে সেনা নামিয়ে, কারফিউ জারি করেও কোটা ইস্যুতে অশান্ত হরিয়ানাকে শান্ত করা যায়নি। আন্দোলনের সপ্তম দিনেও রোহতক ও ঝিন্দসহ হরিয়ানার বেশ কয়েকটি জায়গায় বেশ কিছু বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি গাড়িও। বেশ কিছু বাড়ি ও গাড়ি ভাঙচুরও করা হয়েছে। রোহতকে বাস, গাড়ি, পেট্রোল পাম্প, এমনকি রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অভিমন্যুর বাড়িতেও লাগানো হয়েছে আগুন।শুক্রবার থেকে এখনও পর্যন্ত হরিয়ানায় জাঠ বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন আটজন। গুরুতর জখম হয়েছেন কমপক্ষে ৮০ জন। জাঠরা বর্তমানে ‘উচ্চবর্ণের মর্যাদা’ পেয়ে থাকলেও আন্দোলনকারীদের দাবি চাকরির ক্ষেত্রে ‘নিম্নবর্ণে’র মানুষেরা যেসব সুবিধা পেয়ে থাকেন তাদেরও একই সুবিধা দিতে হবে। আলাপ-আলোচনা করেও এখনো পর্যন্ত এ সমস্যার কোনো সমাধান আসেনি। বৈষম্য নিরসনে ‘নিম্নবর্ণের মানুষদের’ কিছু বাড়তি সুবিধা দিয়ে থাকে ভারতীয় সরকার। কিন্তু জাঠ নেতাদের অভিযোগ এই কোটার কারণে সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এনএফ/আরআইপি