কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবাদি-অনাবাদি জমিতে কৃষকরা এখন সরিষা চাষ করছেন। তাদের বক্তব্য ধানের তুলনায় সরিষায় লাভ বেশি। তাই বিভিন্ন ফসল ঘরে তোলার পর ওই জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন তারা। জেলার অধিকাংশ এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে এখন হলুদের সমারোহ। কৃষি বিভাগ বলছে, বিগত বছরগুলো থেকে চলতি মৌসুমে উপজেলায় বেড়েছে সরিষার আবাদ যা ১৯৭১ সালের পর সর্বোচ্চ।
জেলার সদর উপজেলার গবরাতলা, সুন্দর, ইসলামপুর, শিবগঞ্জের পাঁকা, দূর্লভপুর, ছত্রাজিতপুর ও মনাকষা, শ্যামপুর, বাবুপুর, কানসাট, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট, কাশিয়াবাড়ী, পুকুরিয়া, হাজারবিঘীসহ বিভিন্ন এলাকায় এখন সরিষার আবাদ চোখে পড়ার মতো। ভালো ফলন দেখে পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরাও।
জেলার হাজারবিঘী গ্রামের তোজাম্মেল হক বলেন, আমি প্রতিবছর সরিষার আবাদ করি। এবারও করেছি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার ফুল-ফল ভালো এসেছে। তাই পোকা দমনে কীটনাশক স্প্রে করছি। আমি দেড় বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আশা করছি ৯ মণ সরিষা হবে। সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সরিষা চাষি আনারুল ইসলাম বলেন, আমার দুই বিঘা জমিতে বারি-সরিষা ১৪ চাষ করছি। অন্য বছরের তুলনায় এবার ফুল ও ফল ভালো এসেছে। আশা করছি দুই বিঘায় প্রায় ১২ মণ সরিষা পাব। বর্তমানে বাজারে সরিষা বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার টাকা মণ দরে।
পুকুরিয়া এলকার সুজা মিয়া বলেন, দুই বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করে যা লাভ হয়, অন্য ফসলের চাইতে অনেক বেশি। কারণ এই ফসলে খরচ হয় না। অল্প খরচেই এই ফসল ঘরে ওঠার উপযোগী হয়ে যায়। এবারও ওই দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। ফলন দেখে মনে হচ্ছে, গতবারের চেয়ে উৎপাদন বেশি হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, এ জেলায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সরিষার আবাদ। গতবছরের তুলনায় চলতি বছরে ১০ হাজার মেট্রিক টন বেশি সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যা ১৯৭১ সালের পর সর্বোচ্চ। এবার অধিকাংশ জমিতে স্থানীয় টরি জাতের পরিবর্তে উচ্চ ফলনশীল বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৫, বারি সরিষা-১৭ ও বারি সরিষা-১৮ বিনা সরিষা ৪ ও বিনা সরিষা-৯ জাতের আবাদ হয়েছে।
এবার জেলায় মোট ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এই সরিষাগুলো বপনের মাত্র ৭০-৮০ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। তাই সরিষাকে কৃষকরা লাভের ফসল হিসেবে অভিহিত করে থাকেন।
এফএ/এমএস