দেশজুড়ে

শিক্ষকশূন্য গোটা স্কুল

হঠাৎ করেই মন্ত্রণালয় এক আদেশে সব বিদ্যালয়ের সংযুক্তি (অ্যাটাচম্যান্ট) আদেশ বাতিল করে দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে হবিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়টি। এখন পুরোপুরি শিক্ষকশূন্য হয়ে পড়েছে স্কুলটি।

গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর থেকে এখানে কোনো শিক্ষক নেই। তাই হচ্ছে না তেমন ক্লাসও। নতুন বই পেলেও ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দও নেই। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন অভিভাবকরাও। এ অবস্থায় ইন্সট্রাক্টর, কম্পিউটার অপারেটর, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর দিয়েই ক্লাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুপারিনটেনডেন্ট (ভারপ্রাপ্ত) মো. শাহজাহান কবীর।

তিনি জানান, এ বিদ্যালয়টিতে ৫ জন শিক্ষককে বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে সংযুক্তিতে (অ্যাটাচম্যান্ট) এনে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছিল। কিন্তু গত ১৫ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয় এক আদেশে তাদেরকে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফেরত পাঠাতে বলে। তাদের সংযুক্তি আদেশ বাতিল করা হয়। ওই দিনই তাদেরকে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর থেকেই বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক নেই। অথচ এখানে কমপক্ষে ৬ জন শিক্ষক প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আগামী সপ্তাহে শিক্ষক দেবেন বলে জানিয়েছেন। এ অবস্থায় স্কুল বন্ধ রাখলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই স্কুল চালু রেখেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইন্সট্রাক্টর, ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের আপাতত তেমন কোনো কাজ নেই। তাই তাদেরকে দিয়েই পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি নিজেও ক্লাস নিচ্ছি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মাওলা বলেন, মন্ত্রণালয়ের আদেশে তাদের সংযুক্তি বাতিল করা হয়েছিল। আশা করছি আগামী সপ্তাহেই আবার সংযুক্তিতে শিক্ষক এখানে দেওয়া সম্ভব হবে। এরইমধ্যেই জানতে পেরেছি অর্ডার হয়ে গেছে। নতুন শিক্ষক নিয়োগ হলে আশা করা যায় স্থায়ী শিক্ষক দেওয়া সম্ভব হবে। আপাতত সংযুক্তিতেই তাদের পাঠদান কার্যক্রম চালানো হবে।

জানা গেছে, পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়টি জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যুগ যুগ ধরেই বিদ্যালয়টি মান ধরে রেখেছে। একসময় এখানে প্রতিযোগিতা করে ভর্তি নেওয়া হতো। জেলার বাছাই করা শিক্ষার্থীরা এখানে ভর্তির জন্য প্রতিযোগিতা করতো। পুরোপুরি না থাকলেও এখনও বিদ্যালয়টি সরকারি স্কুলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুণগতমানসম্পন্ন।

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই বিদ্যালয়ের কোনো নিজস্ব শিক্ষক নেই। বিভিন্ন স্কুল থেকে সংযুক্তিতে শিক্ষক এনে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। সর্বশেষ বিভিন্ন স্কুলের ৫ জন শিক্ষক সংযুক্তিতে এনে পাঠদান চালানো হচ্ছিল। গত ১৫ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ের আদেশে তাদের সংযুক্তি বাতিল করা হয়। তাদেরকে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে ফেরত পাঠানো হয়। এ অবস্থায় বছরের প্রথম দিন বিদ্যালয়ে নতুন বই দিলেও পাঠদান কার্যক্রম না থাকায় শিক্ষার্থীদের সে আনন্দ ম্লান হয়ে যায়।

সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এফএ/এএসএম