দেশজুড়ে

দেশের আরেক ছোট মসজিদের সন্ধান মিললো মৌলভীবাজারে

মৌলভীবাজারে দেখা মিললো দেশের অন্যতম ছোট এক মসজিদের। রাজনগর উপজেলার ব্রাহ্মণগাঁও এলাকার কাজীখন্দকার মাজারের পাশেই অবস্থান মসজিদটির।

চুন, সুরকি ও ইটের তৈরি প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো এক গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদের ভেতরে রয়েছে একটিমাত্র কক্ষ। একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারতেন ইমামসহ পাঁচজন। ভেতরে জায়গা রয়েছে মাত্র ছয় ফুট। বিভিন্ন সময় সংস্কার করানোর ফলে এখনো মসজিদটির সৌন্দর্য বহাল রয়েছে। তবে এখন আর নামাজ আদায় করা হয় না এই মসজিদে।

স্থানীয় প্রবীণরা জানিয়েছেন, প্রায় ২০০ বছর আগে ওই এলাকার মাটির নিচে কিছু ইট পাওয়া গিয়েছিল। ইটের পাশেই ছোট এই মসজিদটির অবস্থান ছিল।

আরও পড়ুন: ঝিনাইদহের ঐতিহাসিক গোড়ার মসজিদ

টিলার ওপরে অবস্থান হওয়ায় প্রথম দেখে বোঝার উপায় নেই এটি মসজিদ। তবে উপরিভাগের গম্বুজ জানান দিচ্ছে এটি আসলে একটি মসজিদ। চুন, সুরকি ও ইট দিয়ে তৈরি এই মসজিদটির চার কোনায় থাকা চারটি নান্দনিক পিলার দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করছে।

ব্রাহ্মণগাঁও কাজীখন্দকার মাজারের পাশে অবস্থিত কালের সাক্ষী এই নিদর্শনটি এলাকায় ‘গায়েবি মসজিদ’ নামে পরিচিত। তবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে তালিকায় নেই মসজিদটি।

স্থানীয় অনেকেই জানালেন, তাদের পূর্বপুরুষরা বলে গেছেন, এলাকাটি একসময় গভীর অরণ্য ছিল। জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর জঙ্গল কেটে আবাদি জমি তৈরির সময় মাটির নিচে এই মসজিদ পাওয়া যায়। এর পর সেটি সংস্কার করা হয়। কে কখন এটি নির্মাণ করেছেন তার সঠিক কোনো তথ্য জানা যায়নি। তবে এটা প্রাচীন স্থাপত্য।

কথা হয় ব্রাহ্মণগাঁওয়ের প্রবীণ শিক্ষক আব্দুল মতিন আকন্দের (৭০) সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এই মসজিদের ভেতরে ইমামসহ পাঁচজন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারতেন। পরে হয়তো লোকজন বেশি হওয়ায় পাশে আরেকটি মসজিদ তৈরি করেন এলাকাবাসী।

আরও পড়ুন: পাঁচশ বছরের ইতিহাস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি

কাজীখন্দকার মাজারের খাদেম আছকির মিয়া (৬৭) জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের দাদা ও তার আগের পুরুষরাও বলতে পারেননি আসলে কতদিন আগে এই মসজিদ নির্মাণ হয়েছে। দাদার কাছে জেনেছি, তিনিও নাকি শুনেছেন ২০০ বছরের পুরোনো হবে মসজিদটি। এটি দেখার জন্য অনেক সময় লোকজন আসেন।

মাজার কমিটির সেক্রেটারি আহমদ আলী জাগো নিউজকে বলেন, ধারণা করা হয় গৌড় জনপদের মধ্যযুগের স্থাপনা এই মসজিদ। তখন এই অঞ্চলে মুসলিমদের সংখ্যা কম ছিল।

মাজার কমিটির সভাপতি ও মুন্সিবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছালেক মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, মসজিদটি সংরক্ষণের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করবো। দাদার কাছ থেকে জানামতে, এখানে পাহাড়ি টিলা ও গভীর জঙ্গল ছিল। মাটি খননের পর মসজিদটি পাওয়া গিয়েছিল।

এর আগে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ৬ ফুট দৈর্ঘ্য-প্রস্থের এক গম্বুজবিশিষ্ট আরেক মসজিদের সন্ধান মেলে। প্রাচীন ও ইসলামিক ঐতিহ্যের অনন্য নিদর্শনটির নাম ‘কাদিরবক্স মণ্ডল মসজিদ’। এই নামেই প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে তালিকাভুক্ত হয়েছে স্থাপনাটি।

আব্দুল আজিজ/এমআরআর/এএসএম