দেশজুড়ে

ঈদের পর ধুমধামে বউকে ঘরে তোলার কথা ছিল শান্তর

পরিবারের একমাত্র সন্তান রবিন হোসেন শান্ত (২৩)। পাঁচ মাস আগে বিয়ে করেছেন। তবে নববধূকে নিজের বাড়ি তোলা হয়নি। রোজার ঈদের পর স্বজনদের আমন্ত্রণ জানিয়ে ধুমধাম করে স্ত্রীকে ঘরে তোলার কথা ছিল তার। কিন্তু ঢাকায় সিদ্দিকবাজারের বিস্ফোরণে থেমে গেছে সবকিছু। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান তিনি।

শান্ত গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব নাগেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব সরদারের (৫৫) ছেলে। গুলিস্তানে সিদ্দিকবাজারে ৭ হাজার টাকা বেতনে একটি সিরামিকের দোকানের কর্মচারী ছিলেন তিনি। ৭ মার্চ ভয়াবহ বিস্ফোরণে মারা যান তিনি। ৮ মার্চ রাতে পারিবারিক কবরস্থানে রবিন হোসেন শান্তকে দাফন করা হয়।

একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় শান্তর বাবা-মা। অন্যদিকে মর্মাহত হয়ে অঝরে কেঁদেই যাচ্ছেন তার স্ত্রী। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে তার বাড়ি।

শান্তর বাবা সোহরাব সরদার বলেন, ‘একটা মাত্র ছেলে ছিল, আমার কোনো মেয়েও নাই। আমি কী অপরাধ করলাম, আল্লাহ আমার বুকটা খালি করে নিলো। কয়েকমাস আগেই বিয়ে করালাম এখনো বউ ঘরে তুলতে পারলাম না। আমারও বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই।’

বিলাপ করতে করতে শান্তর মা তাসলিমা বলেন, ‘বিধাতা তুমি বলে দাও আমি কী করবো? আমার ছেলের নতুন বউকেও ঘরে তুলতে পারি নাই। তার আগেই আমার বাজান চলে গেলো। আর আমার অসুস্থ স্বামীরে কীভাবে ওষুধ কিনে খাওয়াবো। আমার তো আর কেউ রইলো না।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে শান্তর স্ত্রী জিয়াসমিন (১৮) বলেন, ‘আমি এখন কী করবো। আমার কী হবে। শ্বশুর বৃদ্ধ মানুষ, নিজেই এখন খেতে পারবেন না। আমি স্বামীর ঘর করার আগেই বিধবা হলাম। আর কারও সঙ্গে এমনটা যেন না হয়।’

এসজে/জিকেএস