মাদারীপুরের বিসিক শিল্পনগরীজুড়ে শুধু ফার্নিচারের দোকান। এখানে ঢুকলে প্রথমেই চোখে পড়বে সারি সারি ফার্নিচারের দোকান। শিল্পনগরী গড়ে ওঠার কথা থাকলেও ৪২ বছরে তা হয়ে ওঠেনি।
বিসিক শিল্পনগরী সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর শহরের পুরানবাজার ও তরমুগরিয়া এলাকার কুমার নদের পাশে ১৯৮০ সালের ৮ ডিসেম্বর বিসিক শিল্পনগরী গড়ে ওঠে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সম্প্রসারণের জন্য ১৬ দশমিক ৩৩ একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠে এই বিসিক শিল্পনগরী। এখানে মোট ১৩৫টি প্লট তৈরি করা হয়। এর মধ্যে মালিকানা স্বত্ত নিয়ে ৯টি প্লট মামলাধীন আছে। বাকি ১২৬টি প্লট ব্যবসায়ীদের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৮৪টি উৎপাদনরত শিল্প ইউনিট, ৪টি বাস্তবায়নাধীন শিল্প ইউনিটসহ ৯৩টি ইউনিট রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারীপুরের বিসিক শিল্পনগরীতে নামমাত্র ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প থাকলেও সারি সারিভাবে গড়ে উঠেছে কাঠের ফার্নিচারের দোকান। আছে একাধিক জ্বালানি কাঠের দোকানও। আরও আছে প্রায় ১৫টির মতো স’মিল বা করাতকল। সেইসঙ্গে শিল্পনগরী ঘেঁষে কুমার নদের খাসজমিতেও গড়ে উঠেছে বহু করাতকল। এগুলোর অধিকাংশেরই লাইসেন্স নেই। ইচ্ছামতো প্রভাব খাটিয়ে গড়ে উঠেছে এসব স’মিল। এসব করাতকলের কাঠের গুঁড়া বিসিকজুড়ে নোংরা পরিবেশ সৃষ্টি করে। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হলেও এই কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। এছাড়াও এখানে বেশ কিছু প্লট গোডাউন হিসেবেও ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিক শিল্পনগরীর এক বেকারির মালিক বলেন, করাতকলের কাঠের গুঁড়ার জন্য আমাদের খাদ্য উৎপাদন ঝুঁকির মধ্যে আছে। তাই এখান থেকে এই করাতকলগুলো সরানোর দাবি জানাচ্ছি।
মাদারীপুরের বিসিক শিল্পনগরী সংলগ্ন বাসিন্দা সুমন, হাসান, ময়না, রওশন আরাসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, আমাদের মাদারীপুরের বিসিক শিল্পনগরীতে ঢুকলে মনে হয় এটা যেন কাঠের ফার্নিচার, কাঠ কাটা ও জ্বালানি কাঠ বিক্রির স্থান। এখানে তেমনভাবে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি।
মাদারীপুরের বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, আসলে এখানে ফার্নিচারের দোকানের সংখ্যা বেশি। প্রায় ৪০টির মতো ফার্নিচারের দোকান আছে এখানে। তবে পাশাপাশি উৎপাদক প্রতিষ্ঠানসহ নানা প্রতিষ্ঠান আছে। কোল্ড স্টোরেজ আছে ১টি, অয়েল মিল ১৩টি, বিস্কিট ফ্যাক্টরি ২টি, জান্নাত পিপিসি পাইপ, জান্নাত ব্যাটারি, অন্নদাতা ফ্লাওয়ার মিলস, গোপাল ফ্লাওয়ার মিলস, পদ্ম ফ্লাওয়ার মিলসসহ নানা প্রতিষ্ঠান আছে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ওখানে প্রায়ই ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালিত হয়। আমরা দ্রুত এসব অবৈধ স’মিল বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেবো। এফএ/এএসএম