দেশজুড়ে

ভৈরবে বড় ২ দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন পেতে মরিয়া

আসন্ন ইউপি নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পেতে ভৈরবে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দের কাছে প্রার্থীরা নিজের যোগ্যতা, জনমত ও দলের জন্য একনিষ্ঠভাবে কাজ করছে তার প্রমাণ দেখাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে যারা চেয়ারম্যান পদে বহাল আছেন তারাও এলাকার উন্নয়ন, জনগণের সেবা ও দলের জন্য গত পাঁচ বছর কাজ করেছেন তার প্রমাণ দিয়ে নেতৃবৃন্দের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। অপরদিকে, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নেতৃবৃন্দের মধ্যে যারা মনোনয়নর দেবেন তারাও মাঠ জরিপে পর্যবেক্ষণ শুরু করেছেন। জনগণের কাছে কোনো প্রার্থীর জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা বেশী, কাকে মনোনয়ন দিলে বিজয়ী হতে পারে তা স্থানীয় নেতারা যাচাই-বাছাই করছেন। ইউপি নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে আগামী ৭ মে ভৈরব উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ মাহাবুব আলম জানিয়েছেন।ইউপি নির্বাচনে ভৈরব উপজেলা সাদেকপুর ইউনিয়নে এবার চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের মধ্যে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ থেকে ফজলুল হক মাস্টার, আবু বক্কর সিদ্দিক, লতিফ মাস্টার, শেখ জামির উদ্দিন ও নেকবর খাঁন। অপরদিকে, বর্তমান চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক স্বতন্ত্র থেকে পুনরায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। এছাড়া এই ইউনিয়নে বিএনপির কোনো প্রার্থীর নাম এখন পর্যন্ত শোনা যায়নি। আগানগর ইউনিয়নে এবার আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সেলিম আহমেদ, সাবেক চেয়ারম্যান মোমতাজ উদ্দিন, মো. হুমায়ুন কবীরের নাম শোনা যাচ্ছে। এই ইউনিয়নে বিএনপি থেকে সাবেক চেয়ারম্যান মুসলিম মিয়া, মতিউর রহমান, আবুল বাশারের নাম শোনা যাচ্ছে। শিবপুর ইউনিয়নে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, আওয়ামী লীগ থেকে শফিক আহমেদ, মো. ওসমান। বর্তমান চেয়ারম্যান মো. হোসেন ও দ্বীন ইসলামের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে তারা দুজন বর্তমান স্বতন্ত্র উপজেলা চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিনের সমর্থক হওয়ায় যেকোনো একজন স্বতন্ত্র হয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। এই ইউনিয়নে এখনো পর্যন্ত বিএনপির কোনো প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি। শিমুলকান্দি ইউনিয়নে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. বাবুল মিয়া, দানিছ মিয়া ও দ্বীন ইসলাম এবং বিএনপি থেকে সাবেক চেয়ারম্যান হাজী আফিকুল ইসলাম হারিছ। কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুল হক কবীর ও ফারুক আহমেদ, আব্দুল­াহ আল এবং বিএনপি থেকে মো. লোকমান হুসেন, আবুল কালাম সরকার, মিল­াত মিয়া ও মো. আলামিনের সম্ভাবনা রয়েছে। গজারিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান কায়সার আহমেদ ভূইয়া, মো. ফরিদ খান, কাজী গোলাম সারোয়ার গোলাপ, সোহেল আহমেদ, আব্দুস সালাম শাহরিয়ার, আ. হামিদ এবং বিএনপি থেকে সাবেক চেয়ারম্যান নবী হোসেন সেন্টু ও কবীর আহমেদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা রয়েছে। শ্রীনগর ইউনয়ন থেকে আওয়ামী লীগের মতিন মাস্টার, সার্জেন্ট আবু তাহের, এম মতিন বাচ্চু, ওসমান গণি এবং বিএনপি থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন হেলিম চূড়ান্ত প্রার্থীর দৌড়ে এগিয়ে আছেন।আগামী দুই মাস পর ৭ মে ভৈরবে ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে ৭টি ইউনিয়নে প্রার্থীরা পোস্টার, ব্যানার লাগিয়ে এলাকাবাসীর কাছে দোয়া ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। কোনো কোনো প্রার্থী এলাকার মুরব্বি ও ইউনিয়নের দলীয় নেতাদের সঙ্গে মত বিনিময় করে আলাপ আলোচনা চালিয়ে নিজের পক্ষে মতামত নেয়ার চেষ্টা করছেন। এছাড়া নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীরা ভৈরব উপজেলা সদরের নেতাদের আর্শীবাদ ও দলীয় সমর্থনে মনোনয়ন পেতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে সরকার দলীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে একাধিক প্রার্থী স্থানীয় সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপনসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মো. সায়দুল­াহ ও সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুর ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইফতেখার হোসেন বেনু ও সাধারণ সম্পাদক মো. শেফাত উল্লাহর কাছে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রক্ষা করছেন। অপরদিকে, বিএনপি প্রার্থীরা একইভাবে প্রচারণাসহ কাজ করছেন। তবে বিএনপি ভৈরব উপজেলা কমিটির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় তিনি আত্মগোপনে আছেন। সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলামও দুুটি মামলায় দীর্ঘদিন জেল খেটে জামিনে মুক্তি পেলেও ভৈরবে দলের রাজনীতিতে আপাতত সক্রিয়তা নেই। ফলে বিএনপি প্রার্থীরা মনোনয়ন পেতে তাদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যাচাই বাছাই শেষে জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে যে প্রার্থী এগিয়ে আছেন তাকেই দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হবে বলে উভয় দলের নেতারা জানিয়েছেন।এমজেড/আরআইপি