গ্রীষ্মের দাবদাহে জনজীবনে যেখানে নাভিশ্বাস উঠেছে, সেখানে দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে ঘন ঘন লোডশেডিং। এ পরিস্থিতিতে গরম থেকে বাঁচতে মুন্সিগঞ্জে চাহিদা বেড়েছে চার্জার ফ্যানের। ফ্যানের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে।
সরেজমিন মুন্সিগঞ্জ জেলা শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় দেখা যায়, ফ্যান বিক্রির প্রতিটি দোকানে ক্রেতাদের ভিড়। প্রকারভেদে একেকটি চার্জার ফ্যান ৩৫০০-৯০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতা আকবর হোসেন বলেন, ‘গরমের ওপর কয়েকদিন ধরে দিনরাত লোডশেডিং। বাড়িতে ছোট বাচ্চা আছে। অসনীয় গরমে খুব সমস্যা হচ্ছে। বাধ্য হয়ে চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছি। কিন্তু দাম অনেক বেশি চাচ্ছে দোকানদার।’
আলমাস দেওয়ান নামের আরেকজন বলেন, ‘আমরা গ্রামে থাকি। গ্রামে অনেক লোডশেডিং হচ্ছে। রাইতে চার পাঁচবার কারেন্ট জায়গা। বাধ্য হয়ে ফ্যান কিনতে এসেছি। অন্তত বাঁচতে তো হইবো।’
বিক্রেতা আবুল বাশার বলেন, ‘এখনতো প্রচণ্ড গরম। সেজন্য প্রচুর পরিমাণে ফ্যান বিক্রি হচ্ছে। আগের তুলনায় অনেক বেশি বিক্রি বেড়েছে। আগে যেখানে দিনে ১০-১২টি ফ্যান বিক্রি হতো, সেখানে এখান বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৫০টি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি ফ্যানে এক থেকে দেড় হাজার টাকা বেশি দামে পাইকারিতে কেনা লাগছে। এজন্য কাস্টমারের কাছে আগের চেয়ে দাম বেশি রাখা হচ্ছে। পরিচিত যেসব কাস্টমার আছে তাদের সঙ্গে দাম বেশি রাখার কারণে সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে।’
সুপার মার্কেট এলাকার ফ্যান বিক্রেতা আরশেদ আলী জানান, আমরা ঢাকার নবাবপুর সহ বিভিন্ন স্থান থেকে ফ্যান পাইকারি কিনে আনি। পাইকারিতে দাম বেড়েছে তাই আমাদের খুচরা বাজারে বেশি বিক্রি করতে হচ্ছে। পাইকারি পর্যায়ে প্রতিটি ফ্যানের দাম এক থেকে দেড় হাজার টাকা বেড়েছে টাকা দিয়েও ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খাওয়া লাগতাছে।
জাকির হোসেন নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘প্রয়োজন ২০ পিস, পাচ্ছি পাঁচ পিস। আমরা দাম বাড়াবো কি, কাস্টমাররাই নিজেরাই দাম বাড়িয়ে নিচ্ছে। কেউ একটি পণ্যের দামাদামি করতে নিলে আরেকজন এসে ২০০ টাকা বাড়িয়ে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।’
দাম নিয়ে ক্রেতাদের অসন্তোষের বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মুন্সিগঞ্জের সহকারী পরিচালক আব্দুস সালাম জানান, রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দিকে বেশি মনিটরিং করা হচ্ছে। ফ্যানের বাজার এখনো পরিদর্শন করা হয়নি। তবে ফ্যানের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি মনিটরিং করা হবে হবে।
মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিটির ডিজিএম ইমরান হক বলেন, আমরা চাই না কোনো গ্রাহক একটানা বিদ্যুৎবঞ্চিত থাকুক। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এ সমস্যা আর থাকবে না আশা করি।
আরাফাত রায়হান সাকিব/এসআর/এমএস