মেডিকেল পরীক্ষা করতে গিয়ে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন ধর্ষণের শিকার এক নারী। ঘটনাটি ঘটেছে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি)।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত হাসপাতালকর্মী মো. মানিকের বিরুদ্ধে এবং আগের ধর্ষক মাইদুল ইসলাম রাব্বির বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পৃথক দুটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী। এছাড়া এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে গত ২২ এপ্রিল (ঈদের দিন) ভুক্তভোগী নারীর ভাড়া বাসায় বেড়াতে আসেন তার নিকট আত্মীয় (ভাসুর) মাইদুল ইসলাম রাব্বি। এ সময় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী অটোরিকশা নিয়ে বাইরে কর্মরত ছিলেন। ওইদিন রাত ১০টার দিকে মাইদুল ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। পরে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তিনি চলে যান।
এরপর ভুক্তভোগী নারী ওই ঘটনা তার স্বামীকে জানান। ঘটনার ২ দিন পর ২৪ এপ্রিল পাবনা সদর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন ওই ভুক্তভোগী নারী। পরে তাকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য গত ২৫ এপ্রিল পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠায় পুলিশ। সেখানে শারীরিক পরীক্ষার কথা বলে ওই নারীকে নির্জন একটি রুমে নিয়ে যান হাসপাতালকর্মী মানিক। এ সময় মানিক নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দেন। এরপর ওই নারীর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন এবং এক পর্যায়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান।
এ সময় ওই নারী নিজের সম্ভ্রম রক্ষায় কক্ষ থেকে বের হয়ে আসেন। এ ঘটনার পরদিন ২৬ এপ্রিল অভিযুক্ত হাসপাতালকর্মী মানিকের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ওই নারী।
এদিকে হাসপাতালের একাধিক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে মানিকের আচরণের নিন্দা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় বিব্রত চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মরত স্টাফরা।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক জাহেদী হাসান রুমি জানান, চিকিৎসক হিসেবে তারা লজ্জিত। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে দায়ী ব্যক্তির যেন কঠোর শাস্তি হয়। পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. ওমর ফারুক মীর জানান, তিনি বিষয়টি জেনেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর শুক্রবার (২৮ এপিল) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ধর্ষণের ঘটনার পর ওই নারীকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে তিনি শ্লীলতাহানি বা যৌন নিপীড়নের শিকার হন বলে অভিযোগ দেন। সেই প্রেক্ষিতে তারা থানায় মামলা নিয়েছেন। অভিযুক্ত হাসপাতালকর্মীকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। ওই আাসমি পলাতক রয়েছে। শিগগিরই তাকে ধরা সম্ভব হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
আমিন ইসলাম জুয়েল/এফএ/এএসএম