এ সরকারকে আরও ক্ষমতায় রাখা নিজের পেটে নিজে লাথি মারার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি।
সোমবার (১ মে) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদ আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সাকি বলেন, আইএমএফ বলে দেয় বাংলাদেশ নাকি রোল মডেল। কোনো দেশের অর্থনীতিকে আইএমএফের কাছে যাওয়া বলে দেয় সে দেশের অর্থনীতি কতটা নাজুক এবং খারাপ অবস্থায় আছে। অর্থনীতি ধ্বংসের দিকে না গেলে কেউ আইএমএফের কাছে যায় না। আর আইএমএফ কড়া শর্ত দিয়েছে ভর্তুকি প্রত্যাহারের। তারা বলছে, চুরি দুর্নীতি যা কিছু হচ্ছে, সেগুলো কাঠামোগত সংস্কার করে কমাতে হবে। তারা জনগণের কাছ থেকে ভর্তুকি প্রত্যাহার করতে চায়। মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সেসব জায়গায় ভর্তুকি প্রতার হবে। তার মানে জনজীবন আরও খারাপ হবে, মানুষের ঘাড়ে দ্রব্যমূল্যের আরও চাপ বাড়বে। আর এটাই হচ্ছে এ সরকারের নীতি।
আরও পড়ুন>> মে দিবসের ইতিহাস বেশিরভাগ মানুষেরই অজানা
তিনি বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) নাকি প্রগতির লোক, উন্নতির লোক। এভাবে তারা দাবি করে আসছেন। মিথ্যা কথা গলার জোর দিয়ে এতটা বুক ফুলিয়ে বলা সম্ভবত ভবিষ্যতের মিথ্যুকেরা এদের কাছ থেকে শিখবে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তথ্য মন্ত্রণালয় খুলে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সকাল-বিকেল মিথ্যা কথা বলার জন্য। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে নানাভাবে কুৎসা রটনা করা তাদের প্রতিদিনের দায়িত্ব।
জুনায়েদ সাকি বলেন, যারা বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তাদের বিশাল একটা অংশ শ্রমিক এবং কৃষক পরিবার থেকে যুদ্ধে গিয়েছিলেন। যুদ্ধের ঘোষণায় ছিল রাষ্ট্র সব নাগরিকের জন্য সাম্য মানবিক মর্যাদা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে। স্বাধীনতার আজকে ৫২ বছর হয়ে গেলো। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার নাকি উন্নিয়ন করে আমাদের সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়ার মতো বানিয়ে দিয়েছে। তবে দেশে আজ পর্যন্ত শ্রমিকদের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়নি। আপনি ঘণ্টায় কাজ করবেন, দিন হিসাবে কাজ করবেন, সপ্তাহ হিসাবে কাজ করবেন, মাসব্যাপী কাজ করবেন আর একেক জন আপনাকে একেকভাবে মজুরি দেবে।
আরও পড়ুন>> সবজি বেচেই টিকে আছেন রাহিলা-নুরজাহান-সেলিনারা
বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে স্বাস্থ্যের দিক থেকে অন্যতম ব্যয়বহুল দেশ উল্লেখ করে সাকি বলেন, দেশের মানুষের আয়ের সঙ্গে স্বাস্থ্যের যে ব্যয় তা দুনিয়ার বাকি দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে খুব কমদেশে তা পাওয়া যাবে। স্বাধীনতার সময় দেশের মানুষের জন্য যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কথা ছিল তা তারা তৈরি করতে পারেনি। আমরা যদি ক্ষমতায় যাই দেশের প্রতিটি জনগণের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা কার্ড প্রদান করবো। সামান্য প্রিমিয়াম দিয়ে নাগরিকরা তাদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য যে কোনো চিকিৎসা সরকারি হাসপাতাল থেকে নিতে পারবেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন মন্টু, ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফ দেওয়ান, মোস্তফা জামাল হায়দার প্রমুখ।
আরএসএম/ইএ/এএসএম