ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিজ বাসার বাথরুম থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাব আলীর (৫৮) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১০ মে) সকালে গ্যাস ফিল্ড কোয়ার্টার থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
মুস্তাব আলী নাটোরের পাইকপাড়া সর্দার বাড়ির মৃত নজির উদ্দিন সরকারের ছেলে।
গ্যাস ফিল্ড কোয়ার্টারের কেয়ারটেকার জিয়াউল হক বলেন, ‘সকালে আমার ডিউটি শুরু হয় সকাল ৮টার দিকে। সকালে ঝাড়ু দিয়ে ডরমিটরিতে চলে যাই। সেখানে যাওয়ার পর অধ্যক্ষ স্যারের ছেলে ফোন দিয়ে শাবল নিয়ে যেতে বলেন। আমি বললাম, কেন আসবো। তিনি বললেন, সমস্যা হয়েছে। তার কথায় আমি পাত্তা দেইনি। একটু পর আরেকজন ফোন দিয়ে বললেন কোয়ার্টারে যেতে, সমস্যা হয়েছে। আমি দ্রুত সেখানে যাই। সেখানে গিয়ে একজন আনসার সদস্য ও উনার ড্রাইভারসহ ভেতরে গিয়ে দেখি স্যারের বাথরুমের ভেতরে দরজা লাগানো। আমরা শাবল দিয়ে দরজা ভেঙে দেখি স্যার শাওয়ারে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুঁলে আছেন। তারপর উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
অধ্যক্ষের ভাতিজা রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষক আসিফ বিন আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘চাচার সঙ্গে মাঝে মধ্যে কথা হতো। বিশেষ করে মাসের শেষ দিকে তিনি আমাকে টাকার প্রয়োজন হলে কল দিতেন। তেমন বেশি টাকা নয়, ৫-১০ হাজার টাকার জন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার আব্বার সঙ্গে চাচার কথা হতো। আমি পাশে থাকার সময়ও অনেকবার কথা হয়েছে। সেসময় জানতে পেরেছি, পারিবারিকভাবে তিনি তেমন সুখী ছিলেন না। চাচি আমার চাচাকে গত প্রায় ১০ বছর ধরে সন্দেহ করে যাচ্ছেন। তিনি নাকি আরেকটি বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু গত ১০ বছরেও বিয়ের কোনো প্রমাণ মেলেনি।’
‘আমার একমাত্র চাচাতো ভাইটি বিয়ে করে চাচার ওপরেই চলছিলেন। মাঝে চাচা অনেক টাকা ঋণ করে একটি ট্রাক কিনে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেই ব্যবসা আর থাকেনি। তিনি পারিবারিকভাবে খুবই অশান্তিতে ছিলেন,’ বলেন আসিফ বিন আলী।
এ বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষের ছেলে একমাত্র ছেলে পুটনের নম্বরে কল হলে তিনি রিসিভ করেননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, অধ্যক্ষ পারিবারিক ও মানসিকভাবে অনেক চাপে ছিলেন। তিনি অনেক টাকা ঋণী আছেন। এর আগেও তিনি একবার বিষপান করে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসআর/জিকেএস