দেশজুড়ে

আধা ঘণ্টার রাস্তায় লাগে ৪ ঘণ্টা

কুড়িগ্রামের রৌমারী-রাজিবপুরের ২৯ কিলোমিটার সড়ক শত শত খানাখন্দে ভরা। এই সড়কে মানুষ ও গাড়ি চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। প্রতিদিন ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ১৯৯৮ সালের পর ওই সড়কে রড় ধরনের কোনো সংস্কার কাজ না হওয়ায় এ দুরাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে আধা ঘণ্টার রাস্তায় যেতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘণ্টা। সরেজমিন সড়কের ওই ২৯ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রৌমারীর দাঁতভাঙ্গা, শালুর মোড়, বড়াইকান্দি, ভিটাপাড়া, ঝগড়ারচর, হ্যালিপ্যাড, বিজিবি মোড়, জন্তির কান্দা, মির্জাপাড়া, কাঠালবাড়ী, কোনাচীপাড়া, চাক্তাবাড়ী, কর্ত্তিমারী, সায়দাবাদ, গোলাবাড়ী, বাইমমারী, ধনারচর, কোমরভাঙ্গী, শীবেরডাঙ্গী, রাজিপুরের মরচাকান্দি, চররাজিবপুর, জালচিরা, বটতলা, স্লুইচ গেইটের সামনে শত শত খানাখন্দ। বেশির ভাগ স্থানে সড়কের পিচ উঠে ইটের খোয়া বের হয়ে গেছে। দুই পাশের মাটি সরে গিয়ে সড়ক সরু হয়ে গেছে।দাঁতভাঙ্গার তেকানী ঝগড়ার চর এলাকায় সড়ক ও জনপদের কয়েকজন শ্রমিক কয়েক বছর আগে ভেঙে যাওয়া স্থানটিতে মাটি দিয়ে ভরাট করছেন। রৌমারী স্থলবন্দর দিয়ে পাথরসহ বিভিন্ন মালামাল ভারত থেকে আমদানি করা হয়। ফলে এ সড়কের গুরুত্ব অনেক বেশি। অথচ বেহাল এ সড়কে প্রায়ই ট্রাক বিকল হয়ে পড়ে।রৌমারী আমদানি রফতানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতি মাসে  সরকার পাথর-এলসি থেকে এক থেকে দেড় কোটি টাকা আয় করে। কিন্তু সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে অনেক ব্যবসায়ী এখানে আসতে চান না। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রতি দিন এই সড়ক দিয়ে কয়েক শ’ যানবাহন ও কয়েক হাজার যাত্রী চলাচল করে। এছাড়া মালবোঝাই ট্রাক চলে। সড়কে খানাখন্দ থাকায় প্রায়ই সড়কে যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে থাকে। প্রায় প্রতি দিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। ২৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ৪ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়।কুড়িগ্রাম ৪ আসনের সাংসদ মো. রুহুল আমিন বলেন, `এলাকায় অনেক উন্নয়ন হলেও ২৯ কিলোমিটার এ সড়কের কোনো সংস্কার না হওয়ায় অন্য কাজগুলোর কথা ঢাকা পড়ে যায়। এ সড়কের সংস্কারের ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’দাঁতভাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক নাজমুল হুদা বকুল বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ রৌমারী-রাজিবপুর সড়ক চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এই সড়কে বাসে চলাচল করলে একজন সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারপরও জীবনের তাগিদে চলাচল করতে বাধ্য হয় মানুষ।কর্ত্তিমারী বাজার এলাকার সমাজ সেবক ইস্কান্দার মির্জা বলেন, জরুরি রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স যেতে পারে না। ২৯ কিলোমিটার পার হতেই রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। সময়ের পাশাপাশি ভোগান্তি পোহাতে হয়। গত কয়েক বছর ধরে এ সড়ক সংস্কারের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানিয়েও কোন লাভ হয়নি।সড়ক ও জনপদ কুড়িগ্রামের সহকারী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, রৌমারী-রাজিবপুর সড়কের রৌমারীর দাঁতভাঙ্গার শালুর মোড় থেকে তেকানী ঝগড়ারচর হয়ে থানা মোড় পর্যন্ত ৯ কিলোমিটারে কাজ করার জন্য অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। কাজও শুরু হয়েছে। বাকী ২০ কিলোমিটারের জন্য একটা প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে কাজ শুরু করা হবে।নাজমুল হোসেন/এসএস/আরআইপি