আমি এবার ৪ বিঘা বোরো ধান লাগিয়েছি। ধান গাছগুলো সবুজ রঙ হতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় সেচের মাধ্যমে পানি দিচ্ছি। বৃষ্টি হলে ধান গাছগুলো আরো দ্রুত বড় হবে। তবে সার ও কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে ন্যায্য মূল্য না পেলে লোকসান গুণতে হবে আমাদের। কথাগুলো বলছিলেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন গ্রামের কৃষক মখলেছুর রহমান।ঠাকুরগাঁওয়ে এবার বোরো ধানের বাম্পার উৎপাদনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জেলার কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী। এদিকে গেল বছরে আমন ধান বিক্রি করতে হয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে। আর চলতি মৌসুমে বোরো ধান ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হবে কিনা এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষক। তবে বোরো ধান উৎপাদনের পর পরই যদি সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু করেন তাহলে কৃষক লাভবান হবে বলে মনে করছেন কৃষকরা। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলাসহ পীরগঞ্জ, হরিপুর, বালিয়াডাঙ্গী ও রানীশংকৈল এই ৫টি উপজেলায় বোরো লাগানো সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে মাঠে চলছে বোরো ফসলের পরিচর্যার কাজ।জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর চলতি মৌসুমে ৫৯ হাজার ৯৭৮ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ৫০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির আবাদ। এ পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় সম্পূর্ণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আশাবাদ কৃষি বিভাগের।কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, ধান চাষ করে আমরা যতটা না লাভ করতে পারি তার চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে মিলাররা। কারণ সিন্ডিকেট করে জেলার প্রতিটি বাজার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ধান কেন বেচার কারণে কৃষকরা ধানের দাম পাচ্ছে না। এতে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষক। এ বিষয়ে জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন রাজু জানান, কৃষকরা যে অভিযোগ করেছেন তা ভিক্তিহীন। আমরা বাজার দরেই উৎপাদিত পণ্য ক্রয় করি। তবে সময় মতো সরকার সরাসরি কৃষকের কাছে ধান ক্রয় করলে কৃষক লাভবান হবেন বলে মনে করেন তিনি। জেলার কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী জানান, আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষককে সব সময় পরামর্শ দিয়ে আসছি। কিভাবে বোরো ধানের ভালো ফলন করতে হবে সেদিকে বেশি লক্ষ্য রাখছে কৃষি বিভাগ। এখন পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো ধানে বাম্পার ফলন হবে আশা করছি। আর দামের ক্ষেত্রে কৃষকরা যদি তাদের উৎপাদিত ফসল তাৎক্ষনিকভাবে বিক্রি না করে কিছু দিন মজুদ রাখে তাহলে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাবে।রবিউল এহসান রিপন/এসএস/আরআইপি