স্বাস্থ্য

থাইরয়েড রোগের ৭০ শতাংশই বংশগত: গবেষণা

থাইরয়েড রোগের ৭০ শতাংশই বংশগত: গবেষণা

থাইরয়েড রোগের ৭০ শতাংশই বংশগতভাবে বিস্তার করে। তবে জন্মের দুই সপ্তাহের মধ্যে থাইরয়েড শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে শিশুকে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো সম্ভব।

Advertisement

মঙ্গলবার (৩০ মে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েন্স সায়েন্স (নিনমাস) আয়োজিত ‘জেনেটিক্স অব থাইরয়েড ডিজঅর্ডার’ শীর্ষক সেমিনারে এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন থাইরয়েড সোসাইটির সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি অ্যধ্যাপক ডা. নাসরিন সুলতানা। তিনি বলেন, জন্মের দুই সপ্তাহের মধ্যে থাইরয়েড শনাক্ত করা গেলে জন্মগত ত্রুটি চিকিৎসা করে একটি শিশুকে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো সম্ভব। এজন্য সরকারিভাবে শিশু জন্মের পর স্ক্রিনিং বাধ্যতামূলক করা দরকার।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিশ্বর উন্নত সব দেশেই শিশু জন্মের পর শিশুর সব ধরনের ত্রুটি নির্ণয়ে স্ক্রিনিং বাধ্যতামূলক। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো সেটি না হওয়ায় জন্মগত ত্রুটি শনাক্তে দেরি হয়ে যায়। যখন শনাক্ত হয়, তখন আর চিকিৎসা করে খুব বেশি ফল পাওয়া যায় না। ফলে অনেক শিশু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হিসেবে বেড়ে ওঠে।

Advertisement

অনুষ্ঠানে নিনমাস পরিচালক অধ্যাপক ডা. সাদিয়া সুলতানা জানান, শরীরের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে থাইরয়েড। এ অঙ্গ কোনোভাবে ত্রুটিযুক্ত হলে একটি শিশু স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠতে পারে না। তবে সব ধরনের থাইরয়েড ডিজঅর্ডার শনাক্ত করা এখন সম্ভব। এজন্য জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ত্রুটিযুক্ত কোষগুলো শনাক্ত করার প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। যদি নির্দিষ্ট জিন শনাক্ত করা যায় তাহলে দ্রুত সময়ে ওষুধের মাধ্যমে একজন শিশুকে সুস্থ করা সম্ভব।

সেমিনারে বাংলাদেশ অ্যাটোমিক অ্যানার্জি কমিশনের মাধ্যমে জেনেটিক সিকোয়েন্সিং ল্যাব তৈরি হচ্ছে বলে জানান কমিশনের চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক ডা. শামীম মমতাজ ফেরদৌসী।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিনমাস ও চট্টগ্রাম নিনমাসে দুটি ল্যাব স্থাপনের পরকল্পনা পাস হয়েছে। এসব ল্যাব চালু হলে দ্রুত ত্রুটিযুক্ত জিন শনাক্ত করে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থাইরয়েড সোসাইটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. ফরিদুল আলম জানান, জিন যেমন মানুষের শারীরতাত্ত্বিক বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করে তেমনই মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্য কেমন হবে সেটিও নিয়ন্ত্রণ করে। এখন সময় এসেছে জিনোম সিকোয়েন্সিং করে টার্গেট জিন নিয়ন্ত্রণ বা অপসারণ করার। সেটি করা গেলে বংশ পরম্পরায় যেসব রোগ চলে আসে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।

Advertisement

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ অ্যাটমিক অ্যানার্জি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যধ্যাপক ডা. এম এ করিম, বাংলাদেশ থাইরয়েড সোসাইটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. মিজানুল হাসান, থাইরয়েড সোসাইটির ট্রেজেরার ফাতেমা বেগম ও থাইরয়েড সোসাইটির জয়েন্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা ফজলুল বারি।

এএএম/এমকেআর/এমএস