পরিবারের একমাত্র সন্তান ছিলেন রিফাত খন্দকার গালিব (১৯)। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তার বাবা মারা যান। এরপর থেকে একমাত্র সন্তান রিফাতকে নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছিলেন মা লাভলী বেগম। এসএসসি পাস করার পর রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়।
শনিবার (১০ জন) ছুটির দিন থাকায় পদ্মা নদীর চরে বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলেন রিফাত। পরে নদীতে গোসল করার সময় ডুবে যান সায়েম। সায়েম সাঁতার জানলেও রিফাত জানতেন না। সায়েমকে ডুবে যেতে দেখে লাফ দেন রিফাত। এরপর একসঙ্গে দুজনই ডুবে যান। বন্ধুকে বাঁচাতে দিয়ে মারা যান রিফাত।
আরও পড়ুন: পদ্মায় গোসলে নেমে ২ কলেজছাত্র নিখোঁজ
স্বামীর পর নিজের একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ রিফাতের মা লাভলী বেগম। আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, ‘আমার বেঁচে থাকার শেষ অবলম্বনটুকুও শেষ হয়ে গেলো।’
রিফাতের বন্ধুরা জানান, রিফাত ও সায়েম দুজনই একসঙ্গে নদীতে নামেন। সায়েমকে নদীতে তলিয়ে যেতে দেখে সাঁতার না জানা সত্ত্বেও এগিয়ে যান রিফাত। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন পানি কম আছে। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে তলিয়ে যান রিফাত।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দপ্তরের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবদুর রউফ জানান, ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটের মোট ছয়জন ডুবুরি উদ্ধার কাজ চালান। একপর্যায়ে রিফাতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে সায়েমের মরদেহ পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, ‘আমার যতটুকু শুনেছি সায়েম সাঁতার জানলেও রিফাত জানতো না। সায়েমকে ডুবতে দেখেই কিছু না ভেবেই এগিয়ে যায় রিফাত। যেহেতু সে সাঁতার জানতো না তাই ডুবে যায়। মূলত সাঁতার না জানার কারণেই ছেলেটা মারা গেছে।’
রাজশাহী মহানগরীর দরগাপাড় এলাকার মৃত গাজী মইনুদ্দিনের ছেলে রিফাত খন্দকার গালিব। আর সরোয়ার সায়েম মেহেরচন্ডী এলাকার সাইদুর রহমানের ছেলে।
সাখাওয়াত হোসেন/এসআর/জিকেএস