সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রচণ্ড পেটের ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন মানসিক রোগী আব্দুল মোতালেব (৩৫)। চিকিৎসকরা বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে জানতে পারেন তার পেটের ভেতর কলম রয়েছে। এরপর তারা দুইটি ধাপে অ্যান্ডোস্কপির মাধ্যমে প্রথম ১৫টি ও পরে আরও ৮টি কলম ওই রোগীর পেট থেকে বের করে।
সোমবার (১২ জুন) বিকেলে আব্দুল মোতালেব হাসপাতাল ছাড়ার সময় আর কখনো কলম খাবেন না বলে চিকিৎসকদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছেন। এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
আব্দুল মোতালেব বলেন, অনেক দিন আগে একটা কলম খেয়েছিলাম। কিন্তু সেই কলম আর বের হয় না। তাই ভেবেছি আরেকটা খেলে মনে হয় বের হবে। কিন্তু সেটাও বের হয় না। তাই একেক করে ২৩টি কলম খেয়ে ফেলেছিলাম। আমি পেটের ব্যথায় অনেক কষ্ট করেছি। আমার পেটে আর কলম নেই। আমি এখন সুস্থ। তাই আমি আর কোনো দিন কলম খাবো না।
আরও পড়ুন: রোগীর পেট থেকে একে একে বেরিয়ে এলো ১৫ কলম
মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকালে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে এসব বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, অ্যান্ডোস্কপির মাধ্যমে মানুষের পেট থেকে ২৩টি কলম বের করা বাংলাদেশে এটাই প্রথম। আমরা অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে কোনো প্রকার কাটা ছেড়া ছাড়াই মোতালেবের পেট থেকে কলমগুলো বের করতে পেরেছি।
এর আগে ২৭ মে মানসিক রোগীর পেট থেকে কলম বের করার বিষয়টি জাগো নিউজে ‘রোগীর পেট থেকে একে একে বেরিয়ে এলো ১৫ কলম’ শিরোনামে প্রকাশ করে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে।
কনসালটেন্ট ডা. আমিনুল ইসলাম খান জাগো নিউজকে বলেন, ওই মানসিক রোগীটি প্রথমে প্রচণ্ড পেট ব্যথা নিয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। পরে মেডিসিন ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম করে পেটের সমস্যা শনাক্ত করতে পারছিলেন না। পরে কনসালটেন্ট হিসেবে রোগীকে আমার কাছে পাঠানো হয়। পরে আমি তার পাকস্থলীতে অসংখ্য কলম দেখে প্রথমে চমকে যাই। পরে অ্যান্ডোস্কপির মাধ্যমে সেগুলো বের করা হয়। সোমবার দুপুরে তাকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে স্বামী-সন্তান রেখে সিরাজগঞ্জের যুবককে বিয়ে করেন নার্গিসা
মানসিক রোগী মোতালেবের মা লাইলি বেগম জাগো নিউজকে বলেন, আমার পাগল ছেলেটা এক বছর ধরে পেটের ব্যথায় ভুগছিল। অনেক ওষুধ খাওয়ালেও ভালো হয়নি। তবে মনসুর আলী মেডিকেল হাসপাতালে নিলে ডাক্তাররা ওর পেট থেকে ২৩টি কলম বের করেছে। এর আগে মাঝে মধ্যেই বমি করতো। কলমগুলো বের করার পর আমার ছেলে একদম সুস্থ হয়ে গেছে। সেজন্য বাড়িতে নিয়ে এসেছি।
এম এ মালেক/জেএস/জেআইএম