দেশজুড়ে

‘মারা যাওয়ার সময় পানি পান করতে চাইলেও দেওয়া হয়নি’

‘আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি মারা যাওয়ার সময় এক ফোঁটা পানি পান করতে চেয়েছিল, তাও দেওয়া হয়নি। কী এমন অন্যায় করেছিল আমার ছেলে যে এভাবে তাকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে মারতে হলো? আমার একটাই দাবি— হয় আমার ছেলে হত্যার বিচার করুন, নয়তো আমাকে একটু বিষ দেন খেয়ে মরে যাই। কারণ ছেলে হারানো যন্ত্রণা যে আমি আর সইতে পারছি না।’

বুধবার (১৪ জুন) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে কথাগুলো বলছিলেন সুফিয়া বেগম। তিনি বাইসাইকেল ওভারটেক করা নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে নিহত হওয়া সিহাব আলীর মা।

আরও পড়ুন: বাইসাইকেল ওভারটেক করা নিয়ে বিতণ্ডা, স্কুলছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সিহাব আলীর মা সুফিয়া বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে নিয়ে কতই না স্বপ্ন ছিল। কিন্তু এভাবে যে চলে যেতে হবে তা আগে কোনোদিন ভাবিনি। আমার ছেলে নির্দোষ। এভাবে যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।’

মানববন্ধনে সিহাবের বাবা সাইদুর রহমান বলেন, ‘ছেলে হত্যার বিচার পাবো কি না তা নিয়ে সন্দেহে আছি। কারণ যারা হত্যা করেছে তারা নাকি অনেক শক্তিশালী। আমি কোনো কিছু চাই না। শুধু আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন দুর্লভপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান, সহকারী শিক্ষক শাহীন আলী, দুর্লভপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম আজম ও ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শাজাহান আলি। এসময় দুর্লভপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের চার শতাধিক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিল।

গত ৭ জুন বিকেলে উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের শেরপুর ভান্ডার গ্রামের মহলদার পাড়ায় বাইসাইকেল ওভারটেক করা নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে সিহাব আলী (১৭) নামে ওই স্কুলছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করে কয়েকজন যুবক। পরে ৮ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে শেরপুর ভান্ডার গ্রামের সোহেল, নাহিদসহ ১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন সিহাবের বাবা সাইদুর রহমান। পরে আসামি সোহেলকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

সোহান মাহমুদ/এসআর/জেআইএম